পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে টেলিভিশন অভিনেতা অনুপ সোনিকে বিয়ে করেছিলেন ঋতু সোনি। শুরুতে তাদের দাম্পত্যে কিছুটা টানাপোড়েন থাকলেও পরে গড়ে ওঠে সুখের সংসার। কিন্তু বিয়ের ছয় বছর পরই অনুপের পরকীয়ার প্রমাণ হাতে পান ঋতু। ফোনের বিল থেকেই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অনুপ ও ঋতুর প্রথম আলাপ হয় ১৯৯৮ সালে, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। ঋতু তখন সেই অফিসে কাজ করতেন আর অনুপ এসেছিলেন বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব ও পরে প্রেম।
তবে ঋতুর পরিবার প্রথমে এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাননি।
তারা চেয়েছিলেন মেয়ে যেন কোনো ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে করেন। শেষ পর্যন্ত মেয়ের ইচ্ছার কাছে হার মানেন বাবা-মা। ১৯৯৯ সালে অনুপ-ঋতুর বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম ছয় মাসে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হলেও পরে তা থেমে যায়।
দুইজন মিলে সুখী সংসার গড়েন। দুটি সন্তানও হয় তাদের। গর্ভাবস্থার সময় ঋতু চাকরি ছেড়ে একটি সফটওয়্যার সংস্থা গড়ে তোলেন এবং ঘর-সংসার, সন্তান ও কাজ সামলাতে ব্যস্ত থাকেন।
ছয় বছর পর থেকেই দাম্পত্য সম্পর্কে ফাঁটল দেখা দেয়। অনুপ ধীরে ধীরে ঋতুর সঙ্গে সময় কাটানো কমিয়ে দেন।
তার ফোন ব্যবহারে সন্দেহ হওয়ায় ঋতু ফোনের বিল খতিয়ে দেখেন। সেখানেই প্রকাশ পায়, অনুপ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলতেন আরেক নারী, বলিউড অভিনেতা রাজ বব্বরের কন্যা, জুহি বব্বরের সঙ্গে। যখন ঋতু জুহিকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন, তিনি সম্পর্ক অস্বীকার করেন। কিন্তু অনুপ পরে পরকীয়ার কথা স্বীকার করেন এবং জানান, মাঝেমধ্যে জুহির সঙ্গে সময় কাটাতে তিনি পুনেতেও যেতেন। এ অবস্থায় ঋতু সিদ্ধান্ত নেন বিচ্ছেদের, যা ২০১০ সালে সম্পন্ন হয়।
বিচ্ছেদের কয়েক মাস পর, ২০১১ সালে অনুপ বিয়ে করেন জুহি বব্বরকে। তাদের একটি সন্তান রয়েছে। এটাই ছিল জুহির দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে তিনি পরিচালক বিজয় নাম্বিয়ারকে বিয়ে করেছিলেন কিন্তু সে সম্পর্ক টিকেছিল মাত্র দুই বছর।
জুহির মা নাদিরা বব্বরের থিয়েটার দলে অভিনয়ের সূত্রে অনুপ ও জুহির প্রথম পরিচয়। নাটকের দলের পাশাপাশি দুইজনের বাড়িও ছিল কাছাকাছি। বন্ধুত্ব থেকেই জন্ম নেয় পরকীয়া সম্পর্ক। জুহির দাবি, অনুপকে বিয়েতে তার বাবা রাজ বব্বর প্রথমে আপত্তি জানিয়েছিলেন। পরে দুই ভাই, প্রতীক ও আর্য বব্বর, মিলে রাজকে রাজি করান।
১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় জন্ম নেওয়া অনুপ সোনি দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা থেকে অভিনয়ের ওপর পড়াশোনা করেন। হিন্দি টেলিভিশনে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে যাত্রা শুরু। পরে ১৯৯৯ সালে প্রথম হিন্দি ছবিতে অভিনয়। তবে বড় পর্দায় খুব একটা সফল হননি অনুপ। ফেরেন ছোট পর্দায় এবং ২০০৬ সালে ‘কহানি ঘর ঘর কি’ ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে টেলিভিশনে জনপ্রিয়তা পান। ২০১০ সালে ‘ক্রাইম পেট্রল’ রিয়্যালিটি শোয়ের সঞ্চালনা শুরু করেন, যা তার পরিচিতিকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
‘ক্রাইম পেট্রল’-এ দীর্ঘদিন সঞ্চালনার কারণে একদিক দিয়ে জনপ্রিয়তা পেলেও অন্যদিকে নতুন কাজ পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এই জনপ্রিয়তার কারণে পরিচালক-প্রযোজকেরা তাকে আর অন্য চরিত্রে কাস্ট করতে চাইতেন না। এক সময় ছয় বছর কর্মহীনও ছিলেন। ২০২০ সালে তিনি সঞ্চালনা ছেড়ে ফেরেন অভিনয়ে। ‘খালি পীলি’, ‘ক্লাস অফ ’৮৩’, ‘সত্যমেব জয়তে ২’ সহ একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। পাশাপাশি ‘দ্য টেস্ট কেস’, ‘বম্বার্স’, ‘তাণ্ডব’, এবং ২০২২ সালের ‘খাকি: দ্য বিহার চ্যাপ্টার’-এর মতো ওয়েব সিরিজেও কাজ করেন।
এসএন