স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার, আর দায়িত্ব ছিল দেশ মাতৃকার সুরক্ষায় আকাশে উড়বার। সেই দায়িত্ব পালনের শেষ প্রশিক্ষণে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির আহমেদ সাগর। বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ঢাকায় তার মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এবার তাকে নিয়ে এক দীর্ঘ আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। ফেসবুক পোস্টটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
‘মর্মান্তিক হলেও, দয়া করে পাইলটকে দোষ দেবেন না। তিনি চেষ্টা করেছেন, তিনি সত্যিই চেষ্টা করেছেন। তিনি জানতেন এটা একটি স্কুল, তিনি জানতেন আশপাশে শিশু রয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি লড়েছেন, বিমানের গতি সরিয়ে নিতে চেয়েছেন। তিনি নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছেন। তিনি সেই বিমানের সাথেই ঝরে গেছেন।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে সামগ্রিকভাবে অসম্মান করবেন না। তারা আমাদের রক্ষা করে, দেশের জন্য জীবন বাজি রাখে প্রতিদিন। কিন্তু এর মানে এই না যে আমরা চুপ করে থাকবো। আমাদের কঠিন প্রশ্ন করতে হবে। আমাদের স্বচ্ছতা দাবি করার অধিকার আছে।
আর যদি কোথাও গাফিলতি থাকে, যদি কারও ভুল সিদ্ধান্ত প্রাণহানির কারণ হয়ে থাকে, তবে তাকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দোষ দিন না ককপিটে থাকা মানুষটিকে, দোষ দিন তাকে, যে জনবহুল শহরের ওপরে প্রশিক্ষণ ফ্লাইট চালানোর অনুমোদন দিয়েছে। আসল দায়িত্ব সেখানেই।
আর দোষ দিন তাদের, যারা এখনো পর্যন্ত আমাদের পুরোনো যুদ্ধবিমান দিয়ে উড়তে বাধ্য করছে। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, কেন আমরা এখনো ১৯৬০ সালের নকশায় তৈরি এবং ২০১৩ সালে যার উৎপাদন বন্ধ হয়েছে, সেই চীনে তৈরি F-7 যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছি?
এই বিমানগুলো শুধু পুরোনোই নয়, আধুনিক শহুরে অভিযানের জন্য সম্পূর্ণভাবে অনুপযুক্ত। এগুলো ব্যবহার করে আমরা শুধু আমাদের পাইলটদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছি না, বরং নিচের অসংখ্য সাধারণ মানুষের জীবনও হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি। এটা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটা এক বিশাল ব্যর্থতা চিন্তাভাবনার, পরিকল্পনার, এবং নেতৃত্বের। তিনি শহীদ হয়েছেন বীরের মতো। স্যালুট জানাই তোমাকে, ভাই ।’
এসএন