সর্বকনিষ্ঠ ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত, প্রতিভাবান অভিনেত্রী, উদ্যোক্তা, পশুপ্রেমী, স্ত্রী, কন্যা এবং একজন ভালো বন্ধু-প্রতিটি খেতাবই খুব গর্বের সঙ্গে উপভোগ করেন মিলি ববি ব্রাউন। তরুণ এ হলিউড তারকা এখন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে লাখ লাখ ফলোয়ার এবং তার নিজস্ব একটি বিশাল ভক্তের আইকন। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’-এ ইলেভেন চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে মিলি তার সাফল্য অর্জন করেছিলেন; এরপর বাকিটা ইতিহাস।
কিন্তু ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’-এ সাফল্য অর্জনের আগে, অভিনেত্রী অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার প্রায় দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। কারণ, সে সময় কাজ নিয়ে বেশ কিছু জায়গা থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। একই সময়, তার পরিবারও আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। ‘মডার্ন ফ্যামিলি’র মতো শোতে তার উপস্থিতির একটি দারুণ সাফল্য থাকা সত্ত্বেও, মিলি ববি ব্রাউন তার ক্যারিয়ারের প্রাথমিক পর্যায়ে অবহেলার শিকার হয়েছিলেন।
সাগ-আফট্রা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এক কথোপকথনে, মিলি ববি ব্রাউন খোলাখুলিভাবে বলেছিলেন, অভিনয় জগতে কাজ না পেয়ে তিনি এবং তার পরিবার কতটা আর্থিকভাবে সংগ্রাম করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বারবার আশ্বাস পাচ্ছিলাম এবং ভাবছিলাম ‘ঠিক আছে, এই কাজটা হবে। তারাও আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু শেষতক ফিরিয়ে দিয়েছে। এদিকে আমাদের অর্থও ফুরিয়ে যাচ্ছে।’
অভিনেত্রী তখন ব্যাখ্যা করেছিলেন, কীভাবে তিনি মডার্ন ফ্যামিলি, গ্রে’স অ্যানাটমির মতো সিরিজগুলোতে অভিনয় করেছিলেন এবং এমনকি ইনট্রুডার্সেও প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু হলিউডে কাজ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন এবং স্কুলে পড়া শুরু করেন।
আর্থিকভাবে মিলির পরিবার খুব একটা সম্পদশালী ছিল না। অভিনয় ক্যারিয়ারকে সমর্থনের চেষ্টা করার সময় তার পরিবার অনেক আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। কাজের জন্য বারবার ফ্লোরিডা, ইংল্যান্ড এবং তার জন্মস্থান ক্যালিফোর্নিয়ায় যেতে হচ্ছিল এবং এটা ছিল বেশ খরচের বিষয়। তাই, যখন তিনি যথাযথ অভিনয়ের কাজ পাচ্ছিলেন না, তখন তার পরিবার প্রায় ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল।
মিলি গেম অফ থ্রোনসে লিয়ানা মরমন্টের চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন কিন্তু ভাগ্যের অন্য পরিকল্পনা ছিল। এক সাক্ষাৎকারে ‘গেম অফ থ্রোনস’-এ ছোট্ট মেয়ে লিয়ানা মরমন্টের চরিত্রে অভিনয় করার ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। তিনি সেই চরিত্রের জন্য অডিশনও দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তা সফল হয়নি। একই দিনে অভিনেত্রী আরেকটি অডিশনের জন্য গিয়েছিলেন এবং তা ছিল নেটফ্লিক্সের একটি প্রকল্পের। আর সেটি ছিল ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’, যা তার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছিল।
মিলি বলেন, “একদিন আমি গেম অফ থ্রোনসের অডিশনের জন্য গিয়েছিলাম এবং আমি মনে মনে বলেছিলাম ‘এটাই বোধহয় আমার শেষ যাত্রা। এটা না হলে আমরা শেষ।’ কিন্তু একই দিনে, আমি স্ট্রেঞ্জার থিংস-এর অডিশনের জন্য গিয়েছিলাম এবং বাকিটা ইতিহাস।” ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’ বিশ্বব্যাপী সফল সায়েন্স ফিকশন থ্রিলার সিরিজগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর এই সিরিজের অংশীদার হওয়ার পর, মিলির জীবন এবং ক্যারিয়ারের হিসাব-নিকাশই পালটে যায়।
পিএ/এসএন