প্রথমবার ব্যবহারের সময় তারহীন চার্জিং প্রযুক্তি ম্যাজিকের মত মনে হতে পারে, কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই প্রযুক্তিটি প্রায় ১৩০ বছর পুরনো। যদিও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এই প্রযুক্তিটি এখনো খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তবুও খুব সম্ভবত আপনার পরবর্তী স্মার্টফোনটিতে থাকতে পারে ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের ব্যবস্থা। ২০২০ সালের মধ্যে ওয়্যারলেস চার্জিং ইউনিটের সংখ্যা ১ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করেছে লন্ডনের আইএইচএস গবেষণা সংস্থা।
ওয়্যারলেস চার্জিং আনকোরা কোনো ধারণা নয়। ১৮৩১ সালে ব্রিটিশ পদার্থ বিজ্ঞানী মাইকেল ফারাডে সর্বপ্রথম লুকায়িত চুম্বকীয় ও বৈদ্যুতিক তরঙ্গের ধারণা প্রকাশ করেন; যার থেকে ইনডাকশন চার্জিংয়ের সূচনা ঘটে। ইনডাকশন চার্জিং হলো দুটি গ্রাহকের মধ্যে তার ছাড়া শক্তির আদান-প্রদান।
লন্ডনের বিখ্যাত রয়্যাল সোসাইটিতে ধারাবাহিক বক্তৃতায় তিনি তার ‘সাধারণ চুম্বক হতে তৈরি বৈদ্যুতিক স্রোত’ সম্পর্কিত গবেষণার বিস্তারিত বর্ণনা করেন। একটি ছোট কয়েলের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক স্রোত প্রবাহিত করতে তিনি তরল ব্যাটারির ব্যবহার করেছিলেন। যখন এটি অন্য বড় একটি কয়েলের মধ্য দিয়ে ভেতর-বাহির করত তখন এর ফলে ছোট তারের কয়েলটিতে সাময়িক বিদ্যুতের সৃষ্টি হতো।
এছাড়াও রয়েছেন নিকোল টেলসা, যিনি তারহীন বিদ্যুত প্রবাহ সৃষ্টির জন্য উদগ্রীব ছিলেন। তিনি ‘ফারওয়ে আন্ডালায়িং পিন্সিপালস’ ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বাতাসের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের সক্ষমতা প্রমাণ করেছিলেন। তিনি ঊনিশ শতাব্দীর শেষ দিকে একটি গ্রাহক ও একটি প্রেরক সার্কিটের মধ্যে চৌম্বকীয় ক্ষেত্র বা ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করেছিলেন।
আপনি যদি লস এঞ্জেলেসের গ্রিফিথ অবজারভেটরিতে যান তাহলে এই ঐতিহাসিক যন্ত্রটি দেখে আসতে পারবেন। ডেমোতে এটি একটি নিওন সাইনকে কোনো তার ছাড়াই তরঙ্গায়িত করে। আপনি যখন আপনার স্মার্টফোনটি ওয়্যারলেস চার্জিং স্ট্যান্ডে রাখেন তখন তা এভাবেই কাজ করে।
যদিও বহু আগেই প্রযুক্তিটির উদ্ভাবন ঘটেছিল তবে দীর্ঘদিন এর কোন ব্যবহারিক প্রয়োগ ছিল না। পরবর্তীকালে নব্বইয়ের দশক থেকে বৈদ্যুতিক টুথব্রাশে চার্জিং স্ট্যান্ডের মাধ্যমে ইনডাকটিভ চার্জিং পদ্ধতির প্রচলন শুরু হয়।
টাইমস/এনজে/এসআই