দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আদায় করা হবে। যদিও এর আগে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ চুক্তির ফলে শুল্ক ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে। খবর বিবিসির।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই বিভিন্ন দেশকে শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প। এরপর এপ্রিলে সেই শুল্কের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করেন তিনি। তবে সেই সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে আলোচনার জন্য আহ্বান জানান।
ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে যুক্তরাষ্ট্র নিজের মতো শুল্ক চাপাবে। ৯ জুলাই তার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকেই একে একে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করে চিঠি দিতে শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর কথা জানান তিনি। নতুন শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকেই কার্যকর হবে।
তার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটি কোনো চুক্তি না করলে ২৫ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হতো। এ ছাড়া দেশটির ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, যানবাহন ও পরিবহন যন্ত্রাংশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের কথা ছিল।
বুধবার (৩০ জুলাই) এ ব্যাপারে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, একটি ‘সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ’ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন রফতানি পণ্যে কোনো শুল্ক থাকবে না।
ট্রাম্প আরও জানান, দক্ষিণ কোরিয়া ৩৫ হাজার কোটি বা ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এসব বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ’ থাকবে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ১০ হাজার কোটি বা ১০০ বিলিয়ন ডলারের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও অন্যান্য জ্বালানি পণ্য কিনবে।
এছাড়া দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে ‘বড় অঙ্কের’ অর্থ লগ্নি করতে রাজি হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প। অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে কোনো প্রকল্প বা খাতে সরাসরি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য হবে তাদের নিজেদের অর্থনৈতিক লাভ ও স্বার্থ নিশ্চিত করা। যদিও এ বিনিয়োগের পরিমাণ জানানো হয়নি।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ংয়ের ওয়াশিংটন সফরের কথা রয়েছে। তখন এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের হঠাৎ সামরিক আইন জারির জেরে দক্ষিণ কোরিয়ায় সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যায়।
অস্থিরতা কাটিয়ে গত জুনে আগাম নির্বাচনের মধ্যদিয়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন লি জে-মিয়ং। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে আরেক অনিশ্চয়তায় পড়ে দেশটি। তবে নতুন চুক্তিতে সেই অনিশ্চয়তা দূর হবে বলে মনে করছেন লি জে-মিয়ং।
বাণিজ্য চুক্তির এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘এটা সব ধরনের ‘অনিশ্চয়তা দূর করবে’ এবং এটা নিশ্চিত করবে যে দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিযোগীদের তুলনায় সমান অথবা কম পরিমাণে শুল্ক দেবে।
পিএ/এসএন