পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া গভীর সংকট কাটিয়ে দেশের আর্থিক খাতকে ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে আনা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ও সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তার ভাষায়, আমরা আইসিইউ থেকে কেবিনে, কেবিন থেকে এখন বাড়ি ফিরছি বললেও ভুল হবে না।
সোমবার (৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, আর্থিক পরিবর্তনের জন্য সময় লাগে। আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান, প্রক্রিয়া ও ব্যক্তি পর্যায়ে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা গভীরভাবে প্রোথিত। তবে কিছু সৎ ও দক্ষ মানুষ আছেন, তাদের মাধ্যমেই আমরা সংস্কারের চেষ্টা করছি। এরইমধ্যে আমরা আইসিইউ থেকে কেবিনে, আর কেবিন থেকে বাড়িতে ফিরেছি বললেও ভুল হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা অল্প সময়ের জন্য এসেছি—একটি পথচিহ্ন রেখে যাচ্ছি। আশা করি, পরবর্তী সরকার সেই পথ অনুসরণ করে অর্থনীতিকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করবে। আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৫ আগস্টের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ৮৫২ জন গেজেটভুক্ত পরিবারের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংকগুলো যৌথভাবে ১৬ হাজার শহীদ ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক উপহার পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। কিছু ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান আজ এবং আগামীকাল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সহায়তা দেবে।
ছাত্রদের সঙ্গে জনগণ যুক্ত হলে কোনো সরকারই টিকে থাকতে পারে না—এবারও পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এবারের গণআন্দোলনে বুদ্ধিজীবীরা অনুপস্থিত ছিলেন, কারণ তারা ‘বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন’।
তিনি আরও বলেন, জুলাই শহীদদের ত্যাগ আমরা ভুলবো না। ৫ আগস্টের আকাঙ্ক্ষা আর্থিক খাতে বাস্তবায়ন করবো। অর্থ মন্ত্রণালয় ও অর্থ উপদেষ্টা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে আমরা আশাবাদী।
নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন কথা জানিয়ে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, আর্থিক খাতকে ঢেলে সাজাতে নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। খসড়াটি ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই আইন পাস হলে ব্যাংক খাত একটি সুশৃঙ্খল কাঠামোতে ফিরে আসবে এবং ভবিষ্যতে আর কোনো ফ্যাসিবাদী অপশক্তি এ খাতের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে না। তার ভাষায়, পুরোপুরি পরিবর্তন হতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগতে পারে। তবে আমরা আশাবাদী—পরিবর্তন আসবে। এর জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
এসএন