এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেইজিং ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে—জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছে চীন। বার্লিনকে সতর্ক করে সোমবার চীন বলেছে, ‘সংঘাত উসকে দেওয়া ও উত্তেজনা বৃদ্ধি করা উচিত নয়।’
তাইওয়ান প্রণালি এবং পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক আচরণের প্রসঙ্গ টেনে জাপান সফরকালে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল বলেছেন, ‘চীন বারবার হুমকি দিচ্ছে, তারা একতরফাভাবে অবস্থার পরিবর্তন করবে ও সীমান্ত নিজেদের অনুকূলে নিয়ে নেবে।’
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়ায়ার সঙ্গে সোমবার আলোচনার পর ওয়াদেফুল বলেন, ‘বিশ্ববাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ সংবেদনশীল কেন্দ্রে যেকোনো ধরনের উত্তেজনা বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং আজ বলেছেন, ‘পূর্ব চীন সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি স্থিতিশীলই রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আঞ্চলিক বিভিন্ন দেশগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন, সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করুন এবং সংঘর্ষ উসকে দেওয়ার ও উত্তেজনা বৃদ্ধির পরিবর্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখুন। তাইওয়ান প্রশ্নটি চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
এদিকে টোকিওতে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ওয়াদেফুল ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ‘রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রে চীনের সহায়তার’ কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘চীন ছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এ আগ্রাসন চালানো সম্ভব হতো না। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য সামগ্রীর সরবরাহকারী ও তেল-গ্যাসের সেরা ক্রেতা হলো চীন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে বৈঠকের আগে তিনি আরো বলেন, কিয়েভের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া ‘অত্যন্ত জরুরি’।
আলাস্কায় গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের শীর্ষ বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি স্পষ্ট করেছে, ন্যায়সংগত ও টেকসই শান্তির জন্য মস্কোকে অবশেষে পদক্ষেপ নিতে হবে।
তত দিন পর্যন্ত রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে হবে, যার মধ্যে ইউক্রেনকে আরো সহায়তা দেওয়াও অন্তর্ভুক্ত।’
তিনি আরো জানান, ‘ওয়াশিংটনে সোমবার আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো ন্যায়সংগত শান্তির পথে একটি আলোচনাভিত্তিক সমাধানের উপাদানগুলো গড়ে তোলা। দৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চুক্তির পরও ইউক্রেনকে কার্যকরভাবে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হতে হবে।’
সূত্র : এএফপি
এসএন