জাপানে চালের দাম এখন আকাশচুম্বী। ২০২৩ সালের তীব্র গ্রীষ্ম, সরবরাহ সংকট এবং ভূমিকম্প সতর্কতায় ক্রেতাদের চাহিদার কারণে চালের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। জুন মাসে চালের দাম এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ১০০.২ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ১০১.৭ শতাংশ।
এদিকে এই বছরের জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার মুখে।
ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার খরচ এবং বিশেষ করে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি ক্ষুব্ধ ভোটারদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইশিবা সরকার জরুরি মজুদ উন্মুক্ত এবং নতুন কৃষিমন্ত্রী নিযুক্ত করেছে। সরকার কৃষকদের চাল ছেড়ে বিকল্প ফসল চাষে উৎসাহ দিতেও নীতিগত পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, জাপানের মূল মুদ্রাস্ফীতির হার জুনের ৩.৩ শতাংশ থেকে কমে জুলাইয়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১ শতাংশে।
তবে এটি এখনো ব্যাংক অব জাপানের নির্ধারিত ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার অনেক ওপরে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাদ দিলে ভোক্তা মূল্যসূচক ৩.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা জুনের মতোই রয়ে গেছে। মূল্যস্ফীতির কারণে সুদের হার বৃদ্ধির চাপ থাকলেও এখনো মুদ্রানীতি কঠোর করা হয়নি। ব্যাংক অব জাপানে সর্বশেষ জানুয়ারিতে সুদের হার বাড়িয়েছিল, তবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতিকে সাময়িক সমস্যা হিসেবে দেখছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কেও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন জাপান। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানকে আরো বেশি আমেরিকান চাল আমদানি করতে চাপ দিচ্ছেন। এ ছাড়া জাপানি গাড়ির ওপর আমদানি শুল্ক কমাতে গত মাসে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যাতে গাড়ির শুল্ক ২৭.৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। যদিও এখনো তা কার্যকর হয়নি।
অর্থনৈতিকভাবে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে জাপানের প্রবৃদ্ধির হার ছিল বার্ষিক ১.০ শতাংশ, যা পূর্বাভাসের চেয়ে ভালো।
তবে জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ১০.১ শতাংশ কমেছে, যেখানে গাড়ি রপ্তানি কমেছে ২৮.৪ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে, মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি সংকট এবং বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ে চাপের মধ্যে ইশিবার নেতৃত্ব ও তার দলের জনপ্রিয়তা এখন বড় ধরনের পরীক্ষার মুখে।
সূত্র : এএফপি
এফপি/এসএন