বাংলা সিনেমায় এক নতুন মাত্রা যোগ করল সাইকোলজিকাল থ্রিলার ‘বহুরূপ’। এই ছবিতে দর্শক প্রথমবার দেখতে পেলেন অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীকে একসঙ্গে সাতটি ভিন্ন ভিন্ন রূপে। ছবির ঘোষণা হতেই দর্শকের কৌতূহল তৈরি হয়েছিল, আর ট্রেলার মুক্তির পর তা আরও বেড়ে যায়।
চিত্রনাট্যের কেন্দ্রে রয়েছেন এক সিরিয়াল কিলার, যে খুন করে রক্ত দিয়ে কবিতা লিখে রেখে যায়। প্রতিটি কবিতা আলাদা হস্তাক্ষরে লেখা, একমাত্র সূত্র থাকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট। সেই সূত্র ধরেই এগোয় গল্প। সোহম এখানে ‘অভিমন্যু’ নামে এক অভিনেতার চরিত্রে, যার ফিল্ম ক্যারিয়ার আর ব্যক্তিগত জীবন মিলেমিশে তৈরি করে রহস্যময় এক পরিসর। তাঁর প্রেমিকা ‘উত্তরা’-র চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইধিকা পাল, যিনি নিজেও অভিনয় জগতের সঙ্গে জড়িত।
ছবির কাঠামোতে রয়েছে ফ্ল্যাশব্যাক আর ফ্ল্যাশ ফরোয়ার্ড। একদিকে তদন্ত এগোয় খুনের রহস্য উন্মোচনের পথে, অন্যদিকে চরিত্রগুলোর মানসিক টানাপোড়েন ভরিয়ে তোলে গল্প। তবে বুনটে কোথাও কোথাও দুর্বলতা চোখে পড়ে। ‘বাইশে শ্রাবণ’ কিংবা ‘ভিঞ্চিদা’-র সঙ্গে তুলনা টানা হলেও, সেই গভীরতা এখানে পুরোপুরি ধরা দেয়নি।
পুলিশ অফিসার বৃশভাদিত্যর ভূমিকায় কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় নিখুঁত। পরিচালক ডিডি-র চরিত্রে লোকনাথ দে দর্শকের নজর কাড়েন। সোহম চক্রবর্তী প্রতিটি লুক যথাসাধ্য বিশ্বাসযোগ্যভাবে ফুটিয়ে তুললেও, শক্তিশালী চিত্রনাট্য পেলে তাঁর অভিনয় আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠত। ইধিকা পালও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন।
সিনেমাটোগ্রাফি ও অ্যাকশন কোরিওগ্রাফি যথেষ্ট মানসম্মত। গল্প শেষ হয় সিকুয়েলের সম্ভাবনা ইঙ্গিত করে। সব মিলিয়ে ‘বহুরূপ’ থ্রিলারের স্বাদ দিলেও আরও যত্নে নির্মাণ করলে তা হয়ে উঠতে পারত ব্যতিক্রমী।
এমকে/টিকে