ভেনেজুয়েলার নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় প্রাণ গেল অন্তত ১১ জনের

দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলা থেকে আসা সন্দেহভাজন মাদকবাহী একটি নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানে ১১ জন নিহত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ১১ জনকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ভেনেজুয়েলা থেকে আসা সন্দেহভাজন মাদকবাহী একটি নৌকায় হামলা চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পর এটিই প্রথম বড়সড় অভিযান।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “কয়েক মিনিট আগে আমরা একটি মাদকবাহী নৌকা গুলি করে উড়িয়ে দিয়েছি। এতে বিপুল পরিমাণ মাদক ছিল। আরও অনেক আসছে, দীর্ঘদিন ধরে মাদক আমাদের দেশে ঢুকছে... এগুলো এসেছে ভেনেজুয়েলা থেকে।”

পরে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যাতে আকাশ থেকে ধারণ করা ড্রোন ফুটেজে সমুদ্রে একটি স্পিডবোট বিস্ফোরিত হয়ে আগুনে জ্বলতে দেখা যায়।

ট্রাম্প বলেন, “এই অভিযানে ১১ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। কোনো মার্কিন সেনা হতাহত হয়নি।”

তিনি দাবি করেন, নিহতরা ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত গ্যাং ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’র সদস্য। এই গ্যাংকে যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। ট্রাম্প আরও অভিযোগ করেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই গ্যাংকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। তবে কারাকাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ভেনেজুয়েলার তথ্যমন্ত্রী ফ্রেডি নানেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, ট্রাম্প যে ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন তা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। তবে রয়টার্স ভিডিওটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করে কোনো কারসাজির প্রমাণ পায়নি। পূর্ণাঙ্গ যাচাই এখনও চলছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এখনো হামলার বিস্তারিত প্রকাশ করেনি। নৌকায় কী ধরনের মাদক ছিল, কত পরিমাণ ছিল কিংবা কীভাবে আক্রমণ চালানো হয়েছে সেটি এখনও অস্পষ্ট।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকাকে জব্দ না করে সরাসরি উড়িয়ে দেওয়া অত্যন্ত অস্বাভাবিক। এটি আল কায়েদার মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।

ট্রাম্পের মাদকবিরোধী কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি পারমাণবিক চালিত দ্রুত আক্রমণকারী সাবমেরিন পাঠিয়েছে। এগুলোতে ৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মার্কিন নৌসেনা ও মেরিন আছেন। পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে আকাশপথে পি-৮ স্পাই প্লেনও ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এমআর/এসএন  

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ধ্বংসস্তূপে চাপা মরদেহ, ক্ষুধায় মৃত্যু- গাজায় মৃত্যুমিছিল থামছে না Sep 07, 2025
img
সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে : জিল্লুর রহমান Sep 07, 2025
img
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে দেশজুড়ে পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে আজ Sep 07, 2025
img
মস্কো যেতে অস্বীকৃতি, পুতিনকে কিয়েভে আমন্ত্রণ জেলেনস্কির Sep 07, 2025
img
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ২য় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ Sep 07, 2025
img
ঢাকায় আজ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা, কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা Sep 07, 2025
img
বিশ্বরেকর্ড গড়তে রোনালদোর দরকার আর ২ গোল Sep 07, 2025
img
মওলানা ভাসানী সেতুর ক্যাবল চুরির মামলায় ২ আসামি কারাগারে Sep 07, 2025
img
জাহ্নবীকে অপমানের পোস্টে হাসির প্রতিক্রিয়া, বিপাকে অভিনেত্রী সোনম Sep 07, 2025
img
বিএনপি কোনো চাঁদাবাজদের মনোনয়ন দেবে না: হেলেন জেরিন খান Sep 07, 2025
img
দেশটাকে আর টুকরো টুকরো করবেন না, আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ Sep 07, 2025
img
১৬ বছর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা যে অত্যাচার করেছে, তা পৃথিবীতে বিরল: রেজাউল করীম Sep 07, 2025
img
ববি হাজ্জাজকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জামায়াতের নিন্দা Sep 07, 2025
img
ডাকসু নির্বাচনের প্রচার কার্যক্রম শেষ আজ Sep 07, 2025
img
ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সচেতন থাকতে হবে: মাহবুবের শামীম Sep 07, 2025
img
তেজগাঁওয়ে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সুইটি গ্রেপ্তার Sep 07, 2025
img
ফের হাসপাতালে ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক Sep 07, 2025
img
তামিম ইকবাল বাংলাদেশকে শিখিয়েছে কীভাবে ব্যাটিং করতে হয় : নাবিল Sep 07, 2025
img
মুক্তোর পোশাকে যেন শিল্পকর্ম হয়ে উঠলেন অনন্যা পান্ডে Sep 07, 2025
img
মির্জা ফখরুলের সঙ্গে পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ Sep 07, 2025