রোগ প্রতিরোধে আমড়া

পুষ্টিগুণে ভরপুর টক-মিষ্টি স্বাদের জনপ্রিয় দেশি ফল আমড়া। কাঁচা আমড়া কাঁচা তো খাওয়া যায়-ই, আবার রান্না করেও খাওয়া যায়। পাকা আমড়াও আচার, মোরব্বা, সালাদ, চাটনি তৈরিতে ব্যবহার হয়। মুখরোচক ফল হিসেবে একটি আমড়ায় প্রায় তিনটি আপেলের সমান পুষ্টি থাকে। বর্তমানে বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। রোগ প্রতিরোধে দামে সস্তা দেশি ফল আমড়ার জুড়ি নেই। আমড়া ভিটামিন 'সি'-এর ভালো উৎস। ভিটামিন 'সি' একটি অত্যাবশ্যকীয় ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিয়মিত আমড়া খেলে বিভিন্ন অসুখ থেকে দূরে থাকা যায়।

কাঁচা আমড়া টক বা টক মিষ্টি হয়, তবে পাকলে টকভাব কমে আসে এবং মিষ্টি হয়ে যায়। ফলের বীজ কাঁটাযুক্ত। ৫-৭ বছরেই গাছ ফল দেয়। আমড়া গাছ ২০ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতার হয়। সারাদেশেই আমড়া পাওয়া যায়। তবে বরিশাল ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে আমড়া বেশি হয়। এ ফল জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় বাজারে আসে, থাকে অক্টোবর পর্যন্ত।

আমড়ার পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় রয়েছে ১ দশমিক ১ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম শ্বেতসার, ০.১০ গ্রাম স্নেহ জাতীয় পদার্থ এবং ৮০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন। এছাড়াও আছে ০.২৮ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৪ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৩.৯ মিলিগ্রাম লৌহ। আমড়ার খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালোরি। খনিজ পদার্থ বা মিনারেলসের পরিমাণ ০.৬ গ্রাম ।

আমড়ার ঔষধি গুণ

ভিটামিন সি-এর উৎস: আমড়া ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা একটি অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। প্রতিদিন যদি একটি আমড়া খেতে পারেন তবে ভিটামিন সি এর চাহিদার ৩৯%-৪৯% পূরণ হবে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে। কোলাজেন স্কিন, লিগামেন্ট, টেন্ডন ও কার্টিলেজকে স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে।

ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ: ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড়ের রোগ, মাংস পেশীর খিঁচুনি ছাড়াও যেসব সমস্যা দেখা যায় আমড়া তা প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে আমড়া খান।

ব্রণ দূর করে: খাবারের তালিকায় রাখুন আমড়া, তাহলে ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। ত্বকের ব্রণ কমাতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আমড়া দারুণ কাজ করে। আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। আর ভিটামিন ‘সি’ ত্বক উজ্জ্বল রাখতে অত্যন্ত দরকার। তাই ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে খেতে পারেন আমড়া।

রক্তস্বল্পতা দূর করে: অনেকেই রক্তস্বল্পতায় ভুগে থাকেন। তাদের জন্য আমড়া বেশ উপকারী। কারণ আমড়ায় প্রচুর আয়রন থাকার কারণে এটি রক্তস্বল্পতা রোধ করে। সাথে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিক পর্যায়ে রাখে।

হজমশক্তি বাড়ায়: আমড়ায় রয়েছে বিভিন্ন দ্রবণীয় ফাইবার। এই ফাইবার আমাদের পাকস্থলীর ক্রিয়া প্রক্রিয়া স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখে। ফলে বদ হজম, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখতে আমড়া খান।

সর্দি-কাশি দূরে রাখে: আমড়া সর্দি কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে। যার ফলে নানা সংক্রমণ থেকে সহজেই বেঁচে থাকা যায়। ঠাণ্ডার সমস্যা থেকে দূরে থাকতে আমড়া খান নিয়মিত।

 

টাইমস/এসই/এইচইউ

Share this news on: