‌‌‌‌‌‌‌‘হাম’ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা

ভ্যাকসিন স্বল্পতার কারণে বিশ্বব্যাপী হামের প্রকোপ দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিগত বছরে হামের প্রাদূর্ভাব বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সতর্ক করা হয়েছে। সূত্র বিবিসি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ৩০ ভাগ বেশি হামের রোগী পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাম নিয়ে অবহেলা, স্বাস্থ্যসেবার অবনতি ও হামের ভ্যাকসিন নিয়ে কিছু মিথ্যা প্রতিবেদনের প্রভাবে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।

হাম একটি ভয়াবহ সংক্রামক রোগ। যা থেকে অন্ধত্ব, নিউমোনিয়া, ইনফেকশন ও মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক স্ফীতিসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সেন্টার ফর ডিসিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বিগত ১৭ বছরের হাম সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমবারের মত এক বছরে হাম সংক্রান্ত মৃত্যু ১ লাখ ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৮ সালে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, আমেরিকা, ইউরোপ ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে হামের প্রকোপ সর্বোচ্চ। যেখানে কেবল পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এর প্রকোপ কিছুটা কম।

ভেনিজুয়েলায় হামের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ইউক্রেন, ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও গ্রিসে হামের প্রকোপ। যেখানে গত বছর যুক্তরাজ্যকে হামমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানেও ২০১৮ সালের হামের প্রাদূর্ভাব দেখা গেছে। পর্যটকদের মাধ্যমে এসব দেশ থেকে অন্যান্য অঞ্চলেও হাম ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ ড. মার্টিন ফ্রিড বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে ইউরোপের অধিকাংশ দেশের বাবা-মা তাদের শিশুদের হামের ভ্যাকসিন দেন না। তবে এ অঞ্চলে ভ্যাক্সিন স্বল্পতাও এ সমস্যার জন্য দায়ী বলে তিনি মনে করছেন।

তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু মিথ্যা সংবাদ এ সমস্যায় প্রভাব রাখছে বলে মনে করেন ড. মার্টিন। তাই লাখ লাখ শিশুর জীবন বাঁচাতে বিশেষজ্ঞরা পর্যাপ্ত পরিমাণে হামের ভ্যাকসিন সরবরাহ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান উন্নয়নের পরামর্শ দিয়েছেন।

 

বিবিসি অবলম্বনে লিখেছেন এনামুল হক।

Share this news on: