খাবারের মাধ্যমে যেভাবে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবেন

ডায়াবেটিস একটি হরমোনজনিত রোগ। দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হল ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ।

যাদের  ডায়াবেটিস আছে তারা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে শরীরে ধীরে ধীরে নানা রকমের জটিলতা দেখা  যায়। ডায়াবেটিস অনেক বছর ধরে থাকলে এবং নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে এখান থেকে হৃদরোগ, লিভারের রোগ, কিডনির রোগ, উচ্চ রক্তচাপ,  রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি, স্ট্রোক এমনকি হাত, পা অকেজো ও চোখ অন্ধও হয়ে যেতে পারে।

ডায়াবেটিস থাকলে ওজন বেড়ে গেলে এখান থেকে উচ্চ রক্তচাপ, ফ্যাটি লিভার এমনকি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু একটি সুস্থ ডায়েট প্ল্যানিংয়ের মাধ্যমে খুব সহজেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ,  লিভারের ফ্যাট ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা  যায়।

২০০৮ সালের এক গবেষণায় দেখা  যায় যে, যাদের ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস আছে তাদের মধ্যে ৭৮% মানুষের উচ্চ রক্তচাপ হয়, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়।

ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন-

* টাইপ - ১ ডায়াবেটিস।

* টাইপ - ২ ডায়াবেটিস।

 টাইপ - ১ ডায়াবেটিস

টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ইনসুলিন হরমোন তৈরি হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এটি ডায়াবেটিসের জটিল অবস্থা এবং এতে ওজন ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। শরীরে ইনসুলিন গ্রহণের মাধ্যমে চিকিৎসা নেয়া হয় এবং পাশাপাশি সঠিক ডায়েট মানতে হয়।

টাইপ- ২ ডায়াবেটিস

টাইপ ২ ডায়াবেটিস হল ডায়াবেটিসের আরেকটি রোগ যা উচ্চ কোলেস্টেরলের সাথে সম্পর্কিত।  কারণ ডায়াবেটিস বিভিন্ন কোলেস্টেরল লেভেলকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস এইচডিএল ও এলডিএল লেভেলের ব্যালেন্সকে প্রভাবিত করে আবার এটি উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরল ও একসাথে যুক্ত।  একটি সঠিক ডায়েটের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডায়েট প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের বয়স, লিঙ্গ, ওজন, উচ্চতা ও কাজের মাত্রার ওপর নির্ভর করে ক্যালরি চাহিদা নির্ণয় করে ডায়েট চার্ট নির্ধারণ করা হয়। তবে ওজন ও উচ্চতা অনুযায়ী বিএমআই ও আদর্শ ওজনের মাত্রা নির্ণয় করা হয়।

একজন ডায়াবেটিস রোগীর ওজন বিএমআইয়ের থেকে অতিরিক্ত বেড়ে  যাওয়া যেমন খারাপ তেমনি কমে যাওয়াও খারাপ। তবে অনেকের ভুল ধারণা আছে যে ডায়াবেটিস কেবল বয়স্কদের হয় ছোটদের হয় না। ২৫ বছরের নিচেও ডায়াবেটিস দেখা যেতে পারে, যাকে জিউভিনাইল ডায়াবেটিস বলে।

ডায়াবেটিস মডিফিকেশন

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তাদের জন্য ডায়েটারি মডিফিকেশন দেয়া হল-

ক্যালরি: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্যালরি চাহিদা স্বাভাবিক থাকে। এই চাহিদা পূরণের জন্য শর্করা, আমিষ ও চর্বির আনুপাতিক উপস্থিতি সমান থাকা প্রয়োজন। বয়স ও কাজের ধরন অনুযায়ী  ৪৮-১০০ কিলোক্যালরি / কেজি বডি ওজন/ দিন নিশ্চিত করতে হবে।

শর্করা: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মোট ক্যালরির ৫০-৬০ ভাগ শর্করা জাতীয় খাবার থেকে গ্রহণ করতে হবে এবং এর মধ্যে ৭০%ই হবে স্টার্চ জাতীয়। বাকি ৩০% সরল ল্যাকটোজ,  ফ্রুক্টোজ অথবা সুক্রোজ থেকে গ্রহণ করতে হবে৷

প্রোটিন: আমেরিকান ডায়াবেটিস এসোসিয়েশনের মতে প্রতিদিনের মোট ক্যালরির ১২-২০% প্রোটিন থেকে নিতে হবে।

চর্বি: ক্যালরি চাহিদা পূরণের জন্য শর্করা ও আমিষের পাশাপাশি চর্বিও পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকতে হবে। তবে এই ফ্যাটের অধিকাংশই  PUFA (  পলি অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড ) থেকে আসতে হবে তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ভিটামিন ও মিনারেলস: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস দিতে হবে। এজন্য খাদ্য তালিকায় দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে শাক-সবজি, ফল-মূল ও দুধ থাকতে হবে।

যেসব পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে ডায়াবেটিস, রক্তচাপের মাত্রা ও কোলেষ্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবেন।

লো-জিআই সমৃদ্ধ খাবার: লো-জিআই সমৃদ্ধ খাবার হল গাজর, শাক-সবজি, টক জাতীয় ফলমূল ইত্যাদি। লো-জিআই যুক্ত খাবার রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়তে দেয় না বরং এগুলো রক্তে সুগারের মাত্রাকে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ করে ফলে ডায়াবেটিস সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখে। লো-জিআই সমৃদ্ধ খাবার রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।

সাইট্রাস ফ্রুট: টকজাতীয় ফল রক্তে সুগারের মাত্রা, উচ্চ কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে। টকজাতীয় ফলমূলের মধ্যে যেসব খাবার বাছাই করবেন।

আমলকি: যদি কিডনি ভাল থাকে তাহলে একজন ডায়াবেটিস রোগী সপ্তাহে চারদিন খালিপেটে একটি করে আমলকি খেতে পারবেন। কারণ আমলকিতে আছে ১০০% ভিটামিন সি ও এন্টি অক্সিডেন্ট  যা ডায়াবেটিসের পাশাপাশি হৃৎপিন্ড ও ভাল রাখে।

কমলালেবু ও মালটা: কমলালেবু  ও মালটাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টি ফলের বদলে কমলা লেবু ও মালটা খেতে পারেন।

লেবু: লেবুতে ৬০  শতাংশ ভিটামিন সি আছে। সকালে খালিপেটে লেবুর রস হালকা কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের ও সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে। লেবুর রসে এন্টি  অক্সিডেন্ট আছে  যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম।

তেঁতুল: যখন রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় তখন তেঁতুল পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হয়৷ এতে করে রক্তচাপ কমে ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। 

টমেটো: ডায়াবেটিস ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে টমেটোর সালাদ অনেক উপকারী। 

লো-কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি ও উচ্চ কোলেস্টেরলে আক্রান্ত রোগীদের লো-কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার দিতে হবে।

লাল আটার রুটি: সাদা আটার রুটির চেয়ে লাল আটার রুটিতে শর্করার মাত্রা কম থাকে ফলে এটি লো-কার্বোহাইড্রেট হওয়ায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ঘাটতি পূরণ করে।

ওটমিল: অরগানিক ওটমিল হার্টের জন্য ভাল। ওটমিল ক্যান্সার প্রতিরোধসহ ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

লাল চিড়া: লাল চিড়া সকালের নাস্তায় খাওয়া যেতে পারে ভাতের বা রুটির বদলে। লাল চিড়ায় শর্করার পরিমাণ কম থাকে। 

খৈ: যারা সহজেই ওটমিল খেতে পারেন না তারা ওটমিলের বদলে খৈ খেতে পারেন  যা ডায়াবেটিসের জন্য ভাল।

উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার: সেরিয়াল, শাক-সবজি, আদা ইত্যাদিতে উচ্চ আঁশ আছে৷ আঁশযুক্ত যেকোনো খাবার শরীরের জন্য উপকারী। কারণ এগুলো শরীরের বর্জ্য পদার্থকে ডিটক্সিফাইং করে। ফলে উচ্চ আঁশযুক্ত যেকোনো খাবার রক্তে ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।

আদা: আদাতে এন্টি-অক্সিডেন্ট ও হাই ফাইবার আছে। সকালে খালিপেটে বা বিকেলে পানির সাথে আদার রস মিশিয়ে খেলে পেট পরিষ্কার থাকে। কোষ্টকাঠিন্য দূর হয়, এসিডিটি কমে  যায়, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

ইসুব-গুলের ভুষি: ইসুব-গুলের ভূষিতে আছে হাই ফাইবার  যা হৃৎপিন্ডকে ভাল রাখে, এসিডিটি রোধ করে ও কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যাকে দূর করে দেয়।

ফলমূল: কলা, আম,  আপেল ইত্যাদি ফলমূলে হাই ফাইবার আছে। তবে রক্তে ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা অনুযায়ী কলা বা আম খেতে হবে।  অরগানিক আপেল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। কলা শরীরকে ডিটোক্সিফাইং করে।

টক-জাতীয় ফল: মালটা, কমলালেবু ইত্যাদিতে হাই ফাইবার আছে। যা দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।

সবুজ শাক-সবজি: যেকোনো প্রকারের সবুজ শাক-সবজি যেমন শিম, পালং শাক, কচু শাক, কাচা পেঁপে, লাউ, ঝিংগা, চিচিংগা ইত্যাদিতে প্রয়োজনীয় ফাইবারের পাশাপাশি ভিটামিনস ও মিনারেলস আছে  যা ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং সবুজ শাক-সবজি কোলেস্টেরলের মাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

রঙিন শাক-সবজজি: এতে থাকে হাই ফাইবার। বিশেষ করে গাজর, বিটরুট, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদিতে ভিটামিন এ,  খাদ্যআঁশ আছে  যা ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

এন্টি-অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার: যেকোনো এন্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা ও রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

রসুন: রসুনে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে। আস্ত রসুব কাঁচা খেতে না পারলে ব্লানচিং ( গরম পানিতে ৫ মিনিট ফুটানো )  করে অথবা যেকোনো তরকারিতে দিয়ে খেতে পারবেন  যা হৃৎপিন্ডকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। রসুন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

ব্রোকলি: ব্রোকলি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ব্রোকলির স্যুপ ব্লাড সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

সবুজ চা: সবুজ চায়ে ক্যাটেচিন নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট  যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সবুজ চা বড় ভূমিকা পালন করে।

শশা: শশা দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে তাই এটি কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। শশা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। 

ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার: ওমেগা- ৩ যুক্ত যেকোনো খাবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলকে ধবংস করে ভাল কোলেস্টেরল তৈরি করে।

মাছের লিভার বা তেল: কর্ডাটা মাছের লিভারে বা যেকোনো মাছের তেলে ওমেগা-৩ থাকে যা হৃৎপিন্ডকে ভাল রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মাছের তেলে ভিটামিন এ ও বায়োটিন আছে  যা চুল ও ত্বক সুন্দর করে।

সামুদ্রিক মাছ: যেকোনো প্রকারের সামুদ্রিক মাছ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

কাঠবাদাম: কাঠবাদামে ওমেগা-৩ আছে। সকালে খালিপেটে ৫-৬ টি কাঠবাদাম খেলে হৃৎপিন্ড সুস্থ থাকে ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয়। ডায়াবেটিস রোগীরা ফ্যাট হিসাবে কাঠবাদাম খেতে পারেন।

ডিম: ডিমে ওমেগা-৩ আছে। ডিমের সাদা অংশ হার্টের জন্য ভাল।

ভেজিটেবল অয়েল: যেকোনো ভেজিটেবল অয়েল কোলেস্টেরল ফ্রি। ভেজিটেবল অয়েলের মধ্যে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ আছে  যা হৃৎপিন্ডের জন্য ভাল ও ভাল কোলেস্টেরল তৈরি করে। ভেজিটেবল অয়েলের মধ্যে ক্যানোলা ওয়েল, রাইস ব্রান ওয়েল, অলিভ ওয়েল বেশি ভাল তবে সয়াবিন তেল, সূর্যমুখীর তেলেও ওমেগা-৩ থাকে। তবে অলিভ ওয়েল কাঁচা অবস্থায় সালাদের সাথে মিশিয়ে খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আখরোট:  আখরোটে ওমেগা-৩ আছে,  যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

 

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল  নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

হাই-জিআই যুক্ত খাবার: হাই-জি আই যুক্ত খাবারে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। কাচা চাল ও আলুর চেয়ে ভাত ও সিদ্ধ আলুর জি-আই বেশি৷

অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার: ডায়াবেটিস থাকলে এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। আবার মিষ্টি জাতীয় খাবার ওজন বাড়িয়ে দেয় ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মাংস ও চর্বি জাতীয় খাবার: চর্বিজাতীয় মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রাণিজ মাংস বা চর্বিতে কোলেস্টেরলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলায় ভাল।

প্রোসেসড খাবার: যেকোন প্রসেসড খাবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, রক্তচাপ বাড়ায় ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়৷

লবণাক্ত খাবার:  লবনাক্ত খাবার রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল বাড়ায়।

চিপস, ফাস্টফুড: এসব খাবারে অনেক স্বাস্থ ঝুঁকি আছে।

খাবার সোডা ও ঠান্ডা কোমল পানীয়: এগুলো হাইপারটেনশন বাড়ায়।

অ্যালকোহল: অ্যালকোহল রক্তে গ্লুকোজ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়।

ডিপ ফ্রাইড খাবার: অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবারে হৃদরোগ বেড়ে যায়। 

অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার: রান্নার মধ্যে বা বাহিরের অতিরিক্ত তেল মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ হয় ও রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। 

ঘন দুধ চা: ঘন দুধ চা দেহের এসিডিটি বাড়ায় ও রক্তচাপ বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়৷

 

লেখক: রুবাইয়া পারভীন রীতি,পুষ্টিবিদ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জাহাজসহ জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে সরকার অনেক দূর এগিয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী Mar 28, 2024
img
ঢাবির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯.৯৩ শতাংশ ফেল Mar 28, 2024
img
একনেকে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন Mar 28, 2024
img
রাজসিক সংবর্ধনায় দায়িত্ব নিলেন বিএসএমএমইউ'র নতুন উপাচার্য Mar 28, 2024
img
রোদে পোড়া ত্বকের যত্নে হলুদের ঘরোয়া প্যাক Mar 28, 2024
img
শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি Mar 28, 2024
img
ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫ Mar 28, 2024
img
বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: ম্যাথিউ মিলার Mar 28, 2024
img
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত Mar 28, 2024
img
নিষেধাজ্ঞার ৩ দিনের মধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত Mar 27, 2024