আবরার হত্যার সঙ্গে যুক্ত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এ হত্যাকান্ডের বিচার হবে। সোমবার গণভবনে বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের মা-বাবাকে এমন আশ্বাস দেন।
এর আগে বিকেলে ৫ টার দিকে গণভবনে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া বেগম ও ছোটো ভাই আবরার ফাইয়াজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সান্তনা দেন। তিনি বলেন, ‘অপরাধীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে’।
সাক্ষাত শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর হাতে নিহত আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে ইতিমধ্যে আইনমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় নিহত আবরারের মা রোকেয়া খাতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি মায়ের আসনে থেকে ঘটনার পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর ভূমিকা নিয়েছেন সে জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।’
গণভবনে আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুনের সাথে সাক্ষাতের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে জড়িয়ে ধরেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। কে কার লোক সেটি আমি চিন্তা করিনি।আপরাধী কে বা কোন দল করে সেটা বিবেচনা করিনি।’
তিনি আবরারের মায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাকে সান্তনা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। শুধু বলবো আমাকে দেখেন। স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। আমিও এক রাতে সব হারিয়েছিলাম। আমি তখন বিচারও পাইনি।’
আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করায় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন ও বাবা বরকতউল্লাহ প্রশাসন ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।
প্রসঙ্গত, আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ছাত্রলীগের একটি টর্চার সেলে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা।
আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে এরই মধ্যে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগও বুয়েট শাখার ১১ নেতাকে বহিষ্কার করেছে। এ ঘটনায় আবরারের বাবা ১৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন চকবাজার থানায়।
আবরার হত্যার জের ধরে এরই মধ্যে বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত যে ১৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করেছে বুয়েট প্রশাসন। তবে বাস্তবায়ন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
টাইমস/এমএস