করোনা ভ্যাক্সিনকে বৈশ্বিক সম্পদ বিবেচনার আহ্বান শেখ হাসিনার

করোনা ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশা করা হচ্ছে বিশ্ব শিগগিরই কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাবে। এই ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। সব দেশ যাতে এই ভ্যাকসিন সময়মতো এবং একই সঙ্গে পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। কারিগরি জ্ঞান ও মেধাস্বত্ব প্রদান করা হলে, এই ভ্যাকসিন বিপুল পরিমাণে উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৫তম অধিবেশনে (ভার্চ্যুয়াল) ভাষণে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, মহামারী নিরসনে আমাদের উদ্যোগ এবং এজেন্ডা-২০৩০ অর্জনে আমাদের প্রচেষ্টা সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ‘ভলান্টারি ন্যাশনাল রিভিউ’ রিপোর্ট উপস্থাপন প্রমাণ করে যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে আমরা যথাযথভাবে এগিয়ে চলেছি। বাংলাদেশকে আমরা ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ এবং ২১০০ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ ব-দ্বীপে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিগত বিভাজন নিরসন, সম্পদ আহরণ ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য আমাদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন-কে কাজে লাগানো প্রয়োজন। পাশাপাশি স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল এবং সদ্য উত্তরিত উন্নয়নশীল দেশসমূহের জন্য এই আপদকালীন, উত্তরণকাল ও উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বর্ধিত আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং প্রণোদনা প্যাকেজ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অভিবাসী শ্রমিকদের বিষয়টি সহমর্মিতার সঙ্গে ও ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচনা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও অভিবাসীগ্রহণকারী দেশসমূহের প্রতি আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, প্রবাসী শ্রমিকরা স্বাগতিক ও নিজ দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রেখে চলেছেন। এই মহামারীর কারণে অনেক শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। অনেককে নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা দেশে ফিরে আসা অভিবাসী শ্রমিকদের প্রণোদনা বাবদ ৩৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছি। তবে কোভিড-পরবর্তী সময়ে তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জাতিসংঘের সভাকক্ষটি ঘিরে ‘ব্যক্তিগত আবেগের’ কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে এই কক্ষে দাঁড়িয়ে আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সদ্য স্বাধীন দেশের সরকার প্রধান হিসেবে মাতৃভাষা বাংলায় প্রথম ভাষণ দিয়েছিলেন। আমিও এই কক্ষে এর আগে ১৬ বার সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিশ্বশান্তি ও সৌহার্দ্যের ডাক দিয়েছি। সরকার প্রধান হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে এটি আমার ১৭তম বক্তৃতা।

বিশ্বব্যাপী কোভিডের কারণে জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বিশ্ব নেতারা বিশ্বের সর্বোচ্চ ফোরাম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভার্চ্যুয়াল অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন। এবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘আমরা ভবিষ্যৎ চাই, জাতিসংঘ আমাদের প্রয়োজন: বহুমুখীতার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিতের মাধ্যমে। ’

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কাতারের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সটিতে কী কী সুবিধা রয়েছে? Dec 05, 2025
img
‘সমাধি’র সেটে ধর্মেন্দ্রর স্মৃতি আজও অমলিন আশা পারেখের Dec 05, 2025
img
এভারকেয়ারে পৌঁছেছেন ডা. জুবাইদা রহমান Dec 05, 2025
img
তারেক রহমান ৫ আগস্টের পর দেশে এলে অনেক কিছুই ঘটতো না : রনি Dec 05, 2025
img
২৪৩ স্কুলে পরীক্ষা বন্ধ, কর্মবিরতিতে থাকা সব শিক্ষককে শোকজ Dec 05, 2025
img
বলিউডে ব্যর্থ ‘মেরে ইয়ার কি শাদি’র টিউলিপ, কেন জ্যোতিষী হলেন তিনি? Dec 05, 2025
img
আবারও ফিরছেন গোলাম মামুন ও মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন Dec 05, 2025
img
এভারকেয়ারের পথে জুবাইদা রহমান Dec 05, 2025
img
নাইটক্লাবে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ, পুলিশের নজরে আরিয়ান খান Dec 05, 2025
img
সুইফটের সাথে আড়াই বছরের সম্পর্কে কখনো ঝগড়া হয়নি: ট্র্যাভিস Dec 05, 2025
img
হিরো আলমকে হত্যাচেষ্টার মামলায় জামিন পেলেন ম্যাক্স অভি Dec 05, 2025
img
বচ্চন পরিবারকে বয়কটের ডাক পাপারাজ্জিদের Dec 05, 2025
img
ভেন্যু জটিলতায় কাবিশের কনসার্ট স্থগিত আজ Dec 05, 2025
img

জিল্লুর রহমান

সবাই তাকিয়ে আছে একটি দিকে, খালেদা জিয়া কেমন আছেন? Dec 05, 2025
img
বাণিজ্যিক আদালত অধ্যাদেশ-২০২৫ এর নীতিগত অনুমোদন উপদেষ্টা পরিষদের Dec 05, 2025
img
কনার হাতে মেহেদি-আংটি, নতুন ছবি ঘিরে বিয়ের গুঞ্জন Dec 05, 2025
img
ফের মেসির মুখোমুখি মুলার Dec 05, 2025
img
তারেক রহমানের দেশে আসার ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 05, 2025
img
আরও ৩০ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র Dec 05, 2025
img
লেস্টার স্কয়ারে শাহরুখ-কাজলের ভাস্কর্য Dec 05, 2025