অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আগামী দুই মাসের মধ্যে হাতে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে সিরাম ইন্সটিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ভ্যাকসিন আমদানির চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
কিন্তু সম্প্রতি সিরাম ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, ভারত সরকার টানা দুই মাস তাদের দেশেই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে। ভারতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শেষ হলে বাইরের দেশে তারা রপ্তানির অনুমোদন দেবে।
জানা গেছে, চলতি মাসের শেষ নাগাদ বাংলাদেশে ৫০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন চলে আসবে বলে বারবার জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য গতকাল রোববার অগ্রিম ৬০০ কোটি টাকা ভারতীয় সিরাম ইন্সটিটিউটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে সিরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে ভ্যাকসিন আমদানির চুক্তি করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
টাকা দেয়ার পরই ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে যে, তারা নিজ দেশের চাহিদা পুরণ না হওয়া পর্যন্ত বাইরের দেশে ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির সরকার। এতে বাংলাদেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
তবে ভারত থেকে ভ্যাকসিন রপ্তানির কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি বলে দাবি করেছে সিরাম ইন্সটিটিউট। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সিরাম ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন জানিয়েছেন, করোনার ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যে খবর বেরিয়েছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়।
তিনি বলেন, সিরাম ইনস্টিটিউট এখন অন্য দেশে ভ্যাকসিন রপ্তানির জন্য ভারত সরকারের কাছে অনুমতির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অনুমোদন পেতে হয়তো কয়েকমাস সময় লাগতে পারে।
এদিকে ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশের সঙ্গে সেরাম ইনস্টিটিউটের চুক্তির কোনো হেরফের হবে না বলে জানিয়েছেন বেক্সিমকোর সিইও রাব্বুর রেজা। তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ভ্যাকসিন আসবে বাংলাদেশে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, সাত পাঁচ না ভেবে হুট করে চুক্তি করার মাশুল গুনছে বাংলাদেশ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা অনুসন্ধানের তাগিদও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধের খবরটি গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা এ ব্যাপারে এখনো কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও আমাদের ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হবে না। কারণ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
টাইমস/এসএন