গোপালগঞ্জের ভিসির বিরুদ্ধে ঢাকায় বিক্ষোভ

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে।

ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে উপাচার্য নাসিরের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর শনিবার সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। উপাচার্য বহিরাগতদের দিয়ে এই হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

এই হামলার প্রতিবাদে রোববার টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওই উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। অবিলম্বে তাকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বশেমুরবিপ্রবি প্রায় ৩০ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

‘ভিসির পেটোয়াবাহিনীর অবিলম্বে গ্রেপ্তার চাই’, ‘সন্ত্রাসী হামলায় প্রশাসন চুপ কেন’, ‘আমার ভাই বোনের রক্ত ঝরালে কেন, জবাব চাই জবাব চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়ান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর যে বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে তার বিচারের দাবিতে এখানে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান মানববন্ধনে অংশ নেয়া কয়েকজন।

বুয়েটে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত সেখানকার সাবেক শিক্ষার্থী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ভিসি নাসির উদ্দিন বঙ্গবন্ধুর পূণ্যভূমিতে থাকতে পারেন না। তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদকে কলুষিত করেছেন। আমরা এ ভিসির পদত্যাগ চাই।

এই মানববন্ধন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমবেত হয়ে ভিসি নাসির উদ্দিনের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সদস্যরা।

একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকেই উপাচার্য নাসিরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়। এর মধ্যে জিনিয়া ও উপাচার্যের কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে ওই ছাত্রীকে বকাঝকা ও হুমকি-ধমকি দিতে শোনা যায় উপাচার্যকে। মেয়েটির বাবাকে নিয়েও তীর্যক মন্তব্য করেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১৪টি বিষয়ে আশ্বাস দেয়া হয়, যার মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার না করা, অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান না করা এবং ফেসবুক পোস্ট ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না বলে বলা হয়।

তবে এতে সন্তুষ্ট না হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখেন, যার প্রেক্ষিতে শনিবারের ওই হামলা হয়।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন : ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪০৭ Apr 20, 2024
img
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা Apr 20, 2024
img
মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা : জাতিসংঘ Apr 20, 2024
img
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল Apr 20, 2024
img
তীব্র তাপপ্রবাহ : প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার নির্দেশ Apr 20, 2024
img
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি Apr 19, 2024
img
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীদের তালিকায় আলিয়া Apr 19, 2024
img
পালিয়ে আসা ২৮৫ জনকে ফেরত নিচ্ছে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী Apr 19, 2024
img
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার শঙ্কায় নেতানিয়াহু, ইসরায়েলে জরুরি বৈঠক Apr 19, 2024
img
পালিয়ে বাংলাদেশে এলেন আরও ১১ বিজিপি সদস্য Apr 19, 2024