২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দাবাং’ ছিল শুধু সালমান খানের কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্টই নয়, বলিউডের মূলধারায় এক বিপ্লবী মোড়। কিন্তু এই সুপারহিট ছবির ঝলমলে সাফল্যের আড়ালে যে সম্পর্কের টানাপোড়েন, ক্ষমতার রাজনীতি এবং শিল্পের প্রতি অবহেলা লুকিয়ে ছিল, তা এবার সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ্যে আনলেন পরিচালক অভিনব কাশ্যপ।
স্ক্রিন ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি শুধু সালমানের ব্যক্তিত্ব নয়, গোটা খান পরিবারের ইন্ডাস্ট্রি-নিয়ন্ত্রণের কৌশলকে তীব্র ভাষায় তুলোধোনা করেন।
সেটে সালমানের আচরণ নিয়ে অভিনব কাশ্যপের মন্তব্য, ‘তিনি একজন গুন্ডা’। সেই সঙ্গে পরিচালক দাবি করেছেন, ‘সালমান কখনও অভিনয়ে আগ্রহ দেখাননি। গত ২৫ বছর ধরে তার মধ্যে কোনও শিল্পীসত্তা নেই। তিনি যেন করুণা করে শুটিংয়ে আসেন, যেন সেটে উপস্থিত হয়েই তিনি উদ্ধার করলেন। সালমান সেলিব্রিটি হওয়ার ক্ষমতায় মুগ্ধ, কিন্তু অভিনয়ের প্রতি তার কোনও দায়বদ্ধতা নেই। দাবাং-এর আগে আমি এসব জানতাম না। তিনি একজন গুন্ডা অসভ্য এবং একজন খারাপ মানুষ।’
অভিনবের মতে, সালমান খান এবং তার পরিবার বলিউডে স্টার সিস্টেমের ভিত্তি গড়ে তুলেছে, যা এখন এক প্রকার অদৃশ্য শাসনব্যবস্থা। ‘দাবাং’ পরিচালক বলেছেন, ‘ওরা প্রতিশোধপরায়ণ। আপনি যদি ওদের তালে না তাল মিলিয়ে চলেন, ওরা আপনাকে টার্গেট করবে। ৫০ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে থাকা এই পরিবার পুরো প্রক্রিয়াটাই নিয়ন্ত্রণ করে। এটা শুধু ক্ষমতার খেলা নয়, এটা শিল্পের গলা টিপে ধরার কৌশল।’
এই সাক্ষাৎকারে অভিনব আরও জানান, তার ভাই অনুরাগ কাশ্যপ ‘তেরে নাম’ ছবির সময় একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। তার মতে, ‘অনুরাগ আমাকে বলেছিল, সালমানের সঙ্গে কাজ করো না। যদিও ও বিস্তারিতভাবে কিছু বলেনি, কিন্তু ওর ভয় ছিল, আমি সহজেই বুলির শিকার হয়ে যাব। কারণ ও এই শকুনদের চিনত।’
এই পরিচালক আরও যোগ করেন, ‘তেরে নাম-এর স্ক্রিপ্ট অনুরাগই লিখেছিলেন। কিন্তু বনি কাপুরের খারাপ ব্যবহারের কারণে ও সরে যায়। ওকে কোনও ক্রেডিটও দেওয়া হয়নি। আমার সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। ভালো ছবির ভিত্তি হলো ভালো স্ক্রিপ্ট, যেটা ওরা সম্মান করে না। ওরা শুধু স্টারডমকে পুঁজি করে, শিল্পকে নয়।’
এসব অভিযোগের পাল্টা সালমান খান কখনও প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তার নীরবতা যেন আরও প্রশ্ন তোলে একজন সুপারস্টার কি শুধু পর্দার নায়ক, নাকি বাস্তবেও তার আচরণ মূল্যায়নের দাবি রাখে?
এমকে/এসএন