বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব যথেষ্ট পরিমাণ বদলে গেছে বলে মন্তব্য করে সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে যেভাবে দৌড়ের ওপর রাখছে, বাংলাদেশকে সেভাবে রাখছে না।’ শনিবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক বিশ্লেষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানবপাচার নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, বাংলাদেশ মানবপাচার রোধে কাঙ্ক্ষিত মান অর্জন করতে পারেনি, কিন্তু তাদের চেষ্টা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। এর আগে এমনটি দেখা যায়নি।’ তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে কী হবে, এ নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছিল। বলা হতো, ডোনাল্ড ট্রাম্প ড. ইউনূসকে পছন্দ করেন না।
কারণ হিলারি ক্লিনটন ড. ইউনূসের বন্ধু। আবার মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের সখ্যতা। মোদিও ট্রাম্পের মাধ্যমে কোনো বিপদ ঘটান কি না, তা নিয়েও অনেকের মধ্যে আশঙ্কা ছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প বাংলাদেশকে তেমন কোনো চাপ দেননি।
বরং সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। সেখানে মোদিও উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প উল্টো এ বিষয়ে মোদির কাছে প্রশ্ন রাখতে বলেছিলেন।’ মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘এরপর ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ, দেশটির কিছু কম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে ভারত রয়েছে দৌড়ের ওপর। কিন্তু বাংলাদেশ সে রকম কোনো চাপে নেই। ড. ইউনূসের সরকার বরং যুক্তরাষ্ট্রের নীরব সমর্থন পাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আফগানিস্তান ও বাংলাদেশকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী বলয় তৈরি করার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের ওপর আর ভরসা রাখতে পারছেন না ট্রাম্প। কারণ ভারত তার সুবিধামতো কখনো রাশিয়ার সঙ্গে আবার কখনো চীনের সঙ্গে থাকছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় তার বিশ্বস্ত বন্ধু খুঁজছে। সম্ভবত বাংলাদেশ এই সিগন্যালটাই দিয়েছে যে আমরাই হবো তোমাদের বন্ধু। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থানটা যুক্তরাষ্ট্রমুখী, এটা হয়তো মার্কিন কর্মকর্তারা উপলব্ধি করছেন।’
এবি/টিকে