জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত লংমার্চের সমাপনী পথসভায় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) জানিয়েছে, ওই সময়ের বিদ্যুৎ বিভ্রাটটি ছিল সম্পূর্ণ কারিগরি ত্রুটিজনিত।
পঞ্চগড় নেসকোর ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে পঞ্চগড় পৌর শহরের বৈশাখী মোড় এলাকায় আমাদের একটি লাইনে আগুন লাগে। বিষয়টি বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে আমরা লাইনটি বন্ধ করি। এরপর দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে রাত ৯টা ২৮ মিনিটে সংযোগ পুনরায় সচল করা হয়। অর্থাৎ মাত্র ৮ মিনিট বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রোগ্রামের বিষয়ে আমাদের আগে থেকে জানানো হয়নি। ঘটনাটি ছিল দুর্ঘটনাজনিত কারিগরি সমস্যা।
স্থানীয় বাসিন্দা সায়েম সরকার বলেন, সেই সময় আমি বাড়িতে খাওয়ায় বসেছিলাম। হঠাৎ দেখি বাইরে চিৎকার বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারের তারে আগুন লেগেছে। আমরা বাইরে বের হয়ে বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিই। তারা সঙ্গে সঙ্গে লাইন বন্ধ করে কিছুক্ষণ পর সংযোগ পুনরায় চালু করে। পরে নেসকোর টিম ঘটনাস্থলে আসে।
নেসকোর অফিসিয়াল তথ্যমতে, শনিবারের বিভ্রাটটি ছিল বৈশাখী মোড়ে ট্রান্সফরমারের লাইনে আগুন লাগার কারণে সৃষ্ট কারিগরি ত্রুটি, যা দ্রুত মেরামতের মাধ্যমে মাত্র আট মিনিটের মধ্যেই স্বাভাবিক করা হয়।
এদিকে, গতকাল শনিবার রাতে পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে জুলাই স্মৃতি স্তম্ভে ১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ লংমার্চ শেষে সমাপনী বক্তব্য দিচ্ছিলেন সারজিস আলম। বক্তব্য চলাকালীন হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সারজিস আলম বলেন, আমি নেসকো এবং নেসকো সংশ্লিষ্ট সবাইকে হুঁশিয়ার করে বলছি, এনসিপি গত এক মাসে তিনটি কর্মসূচি করেছে, আর প্রতিবারই কর্মসূচির সময় বিদ্যুৎ চলে গেছে। এক-দু’দিন হলে বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখতাম, কিন্তু প্রতি বারই একই ঘটনা ঘটায় আমরা মনে করি এটি কোনো কাকতালীয় নয়। আপনারা রাজনৈতিক দেউলিয়া, চাটুকার ও তোষামোদকারী। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াদের আমরা দেখে নেব তাদের কলিজা কত বড় হয়েছে, প্রয়োজনে সেই কলিজা ছিড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব।
তিনি আরও বলেন, আজ এখান থেকে ঘোষণা দিচ্ছি পঞ্চগড়ে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান এই জেলায় টিকে থাকতে পারবে না। এটা আমার ব্যক্তিগত ত্যাগ ও প্রতিশ্রুতি। যারা দায়িত্বে থেকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে, তারা নিজেরাই এখন আখের গোছানো শুরু করুক। পঞ্চগড় কোনো পক্ষপাতদুষ্টদের জায়গা নয়।
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, যখনই কেউ চাঁদাবাজ, দখলদার, মাদক ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তখনই তাদের বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলছি পঞ্চগড়ের মাটিতে এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের আর শান্তির ঘুম হবে না। সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
তিনি বলেন, আমরা যদি কখনও সুযোগ পাই পঞ্চগড়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার, তখনই সবাই দেখবে একটি জেলা কেমন হওয়া উচিত ছিল। এতদিন যেভাবে জনগণকে প্রতারণা ও প্রলোভনে রাখা হয়েছে, সেই বাস্তবতা আমরা বদলে দেব।
আইকে/এসএন