জুলাই সনদে যারা সই করেছে তারা এই দেশকে ধারণ করে না : হান্নান মাসউদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, জুলাই সনদে যারা সই করেছে তাদের অন্তত ৯৫ শতাংশ লোকের পরিবারের সন্তানরা বাংলাদেশে নেই। তারা এই বাংলাদেশকে ধারণ করে না। যদি তারা সত্যিই জুলাই অভ্যুত্থানকে গ্রহণ করত, তাহলে আইনি ভিত্তি ও কার্যকারিতা নিশ্চিত না করে এই সনদের তামাশায় তারা অংশ নিত না।

তিনি বলেন, ‘যাই হোক, তাদের রাজনৈতিক অবস্থান থাকতে পারে।

আমরা সেই অবস্থানকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এনসিপির রাজনৈতিক অবস্থান এখনো জুলাইয়ে আটকে আছে।’

সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনে টকশো অনুষ্ঠানে হান্নান মাসউদ এসব কথা বলেন।

হান্নান মাসউদ বলেন, ‘অনেকে বলেন, আপনারা কি জুলাই চেতনার নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মতো রাজনীতি করতে চান? আমরা তা বলতে চাই না।

আমরা বলছি, জুলাই আমাদের রাজনৈতিক ভিত্তি। জুলাই যে আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে, যে স্বপ্নের জন্য আমরা হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে লড়েছি, যাদের রক্তে এই অভ্যুত্থান হয়েছে -আমরা সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন চাই। এক-দেড় বছর কেটে গেলেও এখনো এনসিপি দেখছে, সেই বাস্তবায়ন হয়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ হতো, মারামারি হতো।

এখন জামায়াত ও বিএনপির সংঘর্ষ হচ্ছে, ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতা ধরে রাখাকে কেন্দ্র করে। আগে কেউ ভিন্নমত প্রকাশ করলে ট্রায়াল চলত, হামলা হতো -এখনও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে, বিশেষ করে জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের বট টিম হাজির হয়ে যায়, গালাগাল করে, এমনকি শারীরিকভাবে আঘাত করতেও আসে।’

হান্নান মাসউদ বলেন, আগে আওয়ামী লীগের সময় বলা হতো শেখ মুজিব বা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। এখন বলা হয়, আমাদের আমিরের বিরুদ্ধেও কিছু বলা যাবে না।

মানে, যে ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক সংস্কৃতি একসময় তৈরি হয়েছিল, তা আজও বহাল। তারা সেই সিস্টেমেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে কিন্তু আমরা তা পরিবর্তন করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘এনসিপি জুলাইয়ের কাছে যে ওয়াদাবদ্ধ, সেই ওয়াদাটাই আমরা রক্ষা করছি। আমরা যে জুলাই সনদ বা জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছি, তা আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াসহ চাই। সরকার যদি তা নিশ্চিত না করে, তাহলে আমরা বার বার প্রতারিত হতে চাই না। জুলাই ঘোষণাপত্রে একবার আমরা প্রতারিত হয়েছি; এবার জুলাই সনদের ক্ষেত্রেও তা হতে দিতে পারি না। আমরা চাই সরকার যে চুক্তি করছে, তা বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিক।’

তিনি আরো বলেন, ‘এনসিপির গতকালের অবস্থান থেকে বিষয়টি স্পষ্ট -জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব যারা দিয়েছিল, তাদের সঙ্গে নিয়েই ড. ইউনূসের সরকার গঠিত হয়েছে। তারা দেশে এসে শপথ নিয়েছেন। কিন্তু যখন জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার প্রশ্ন এলো, তখন তাদের কেউ ছিল না -সবাই সরে গেছে।’

হান্নান মাসউদ বলেন, ‘যুদ্ধের সময় গরিবদের সন্তানরা যুদ্ধ করে, মধ্যবিত্তদের সন্তান থাকে না, ব্যবসায়ীরা শুধু রুটি দেয়, আর রাজনীতিবিদরা সমর্থন দেয়। যুদ্ধ শেষ হলে গরিবরা তাদের সন্তানদের লাশ খোঁজে, রাজনীতিবিদরা সমঝোতা করে, আর ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।’

পিএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

বাড়িভাড়া ভাতা ২০% এর নিচে মানি না, মানবো না Oct 20, 2025
শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা ২ হাজার বাড়ালো সরকার Oct 20, 2025
বিএনপি ও জামায়াতকে নিয়ে কী বললেন নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী? Oct 20, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Oct 20, 2025
ভারতকে খুশি করার জন্য জুলাই সনদ' Oct 20, 2025
জামায়াতের পিআর পদ্ধতির আন্দোলন পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা বলছেন নাহিদ Oct 20, 2025
রিয়া মনি মুখ খুললেন হিরো আলমের দুধ দিয়ে গোসল করা প্রসঙ্গে! Oct 20, 2025
হিরো আলমের দুধ দিয়ে গোসল : কি বলে প্রাচীন রীতি এবং আধুনিক বিজ্ঞান! Oct 20, 2025
img
পর্তুগালে বাংলাদেশির সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়াল Oct 20, 2025
img
বিয়ে করছেন স্মৃতি মন্ধানা, বিশ্বকাপের মাঝেই ঘোষণা করে দিলেন হবু স্বামী Oct 20, 2025
img
পাকিস্তানের কূটনৈতিক ফাঁদে ট্রাম্প? Oct 20, 2025
img

৩ জায়গায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

কোনো না কোনো গোষ্ঠী দেশকে আনস্টেবল করতে চাইছে : রুমিন ফারহানা Oct 20, 2025
img
আওয়ামী লীগের আগে জামায়াতের নিষিদ্ধ হওয়া উচিত ছিল : বুলু Oct 20, 2025
img
শাহজালাল বিমানবন্দরে পণ্য রাখার নতুন স্থান নির্ধারণ Oct 20, 2025
img
এল ক্ল্যাসিকোতে ডাগআউটে নিষিদ্ধ বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক Oct 20, 2025
img
এশিয়ার মার্কেটে আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রনির সতর্কবার্তা Oct 20, 2025
img
সেমির আশা টিকাতে লঙ্কানদের বিপক্ষে কাল জিততে হবে টাইগ্রেসদের Oct 20, 2025
img

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন

বিশেষ আদেশের ভিত্তি নিয়ে ভাবছে ঐকমত্য কমিশন Oct 20, 2025
img
এনসিপিকে কেন শাপলা দেওয়া যাবে না, নীলা ইসরাফিলের ব্যাখ্যা Oct 20, 2025
img
বিমানবন্দরের ঘটনায় পোশাক রপ্তানিকারকদের ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা Oct 20, 2025