দেহের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি ঘটায় কারিপাতা

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কারিপাতা এক অপরিহার্য ভেষজ। নানান কাজে এর ভূমিকার জুরি মেলা ভার। কারিপাতা এক কথায় মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের প্রতি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক মরণব্যাধি রোগকে দূরে রেখে আয়ু বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।

Rutaceae গোত্রীয় কারি গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Murraya koenigii। এই গাছ ভারত ও পার্শ্ববর্তি দেশসমূহে যত্রতত্র দেখা যায়। এর পাতা সুগন্ধি মশলা হিসেবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। অনেকে ঝোল জাতীয় রান্নায় ব্যবহার করে থাকে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে কারিপাতা খেলে প্রায় রক্তে প্রায় ৪৫ শতাংশ শর্করা কমে যায়। রক্তে গ্লুকোজের সমতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে কারিপাতা। এতে অ্যান্টিঅক্সাইড, ভিটামিন, বিটা-ক্যারোটিন, কার্বোজেলের মতো উপাদান থাকায় সহজে ডায়াবেটিস রোগ বাড়তে পারেনা। কারি পাতায় ৬.১% প্রোটিন, ১.০% তেল, ১৬% শ্বেতসার, ৬.৪% আঁশ ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি (৪ মিলিগ্রাম/১০০ গ্রাম পাতা) রয়েছে।

কাঁচা কারিপাতা কয়েকটা পানিতে ধুয়ে রান্নার সময় ছিঁড়ে দিলে রান্নায় সুঘ্রাণ ও ঝাঁঝ আসে। গরু ও খাসির গোশত, মিশ্র সবজি, ডাল ইত্যাদি কারিপাতা দিয়ে রান্না করা যায়। কারিপাতা শুকনো করে গুঁড়া বানিয়ে কারি পাউডার তৈরি করা যায়। বোতলে ভরে রেখে রান্নার সময় তা ব্যবহার করা যায়। কারি পাতা শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, এর মাধ্যমে রূপচর্চাতেও বহু উপকার পাওয়া যায়।

চলুন দেখে নেয়া যাক, নিয়মিত কারিপাতা খাওয়ার উপকারিতা-

ক্যান্সার দুরে রাখে
কারিপাতায় রয়েছে ফেনলস নামক একটি উপাদান, যা লিউকোমিয়া এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের মতো রোগকে আসতে বাধা দেয়। এছাড়া কারিপাতায় উপস্থিত কার্বেজল অ্যালকালোয়েড নামক একটি উপাদানও রয়েছে যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

হার্ট ভালো রাখে
কারিপাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে ও ভালো কোলেস্টরলের পরিমাণও বাড়াতে সাহায্য করে। খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কম।

ত্বকের সংক্রমণ কমায়
কারিপাতায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল প্রপাটিজ। যে কোনও ধরনের স্কিন ইনফেকশন কমাতে দারুণ কাজে লাগে।

অ্যানিমিয়া থেকে বাঁচায়
ফলিক এবং আয়রন রয়েছে কারিপাতায়। শরীরের লোহিত রক্ত কনিকার মাত্রা বাড়ায়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে একটা খেজুরের সঙ্গে ২ টা কারিপাতা খেলেই উপকার মেলে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
প্রতিদিন কারিপাতা খেলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারিপাতায় উপস্থিত ফাইবারও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

চুলের যত্নে কারিপাতা
কারিপাতার পুষ্টি উপাদান আপনার পেকে যাওয়া চুলগুলোকে হারিয়ে যাওয়া রঙে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। চুলের তেলে কয়েকটি কারিপাতা যোগ করে ফুটিয়ে নিন এবং মাথার খুলির উপর এটি লাগান। এটি চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করবে। কারিপাতা চুলের অকালপক্বতা প্রতিরোধ করে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ