বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে দেশের বন্দরসংশ্লিষ্ট চুক্তি আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে বাতিল না হলে ৪ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ।
সমাবেশে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রণীত সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) আইনের ৩৪ ধারায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের আগে চুক্তির শর্ত প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর তা প্রকাশে কোনো বাধা নেই। অথচ সরকার চুক্তির শর্ত প্রকাশ না করে গোপনীয়তা বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার করা আইন অনুযায়ী আপনারা চুক্তির শর্ত আগে প্রকাশ করেননি-ঠিক আছে। কিন্তু চুক্তি হওয়ার পরেও তা প্রকাশ না করা গোপন উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত করে। সরকারের এই গোপনীয়তা প্রমাণ করে চুক্তির মধ্যে এমন কিছু রয়েছে, যা জনগণের সামনে আনতে তারা সাহস পাচ্ছে না। এজন্যই আমাদের সন্দেহ- এতে দেশের স্বার্থ নয়, ব্যক্তিগত বা আন্তর্জাতিক স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে।
সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, আমরা দেখি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান প্রায়ই বলেন, দেশে আইনের শাসন, ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চুরি করে, গোপন করে, দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে কখনো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয় না। যে দেশে গোপনে চুক্তি করা হয়, চুক্তিতে কী লেখা আছে, তা জনগণের সামনে প্রকাশ করা হয় না, সে দেশে কীভাবে আপনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান।
বন্দরকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়াকে অস্বচ্ছ, অযৌক্তিক ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী বলে আখ্যায়িত করেছেন বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার নিজেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের বন্দরকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে উপস্থাপন করছে, যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য ‘কলঙ্কজনক অধ্যায়’ রচনা করছে।
সমাবেশে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, ২৪-এর চেতনা কি এই ছিল যে আমাদের দেশের প্রবেশমুখের বন্দরে টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেবে? আজকের সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, এটি সর্বনাশী উদ্যোগ। এটা একটা আত্মবিধ্বংসী উদ্যোগ, এটিকে আমরা কোনোভাবে মেনে নিতে পারি না।
এমআর/টিকে