করোনা চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে ইন্টারফেরন বিটা-১ বি এর যৌথ প্রয়োগ

দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেও ভালো ফল করেছে তিনটি ওষুধের যৌথ প্রয়োগ। ওষুধ তিনটি হলো- ইন্টারফেরন বিটা-১ বি, লোপিনাভির-রিটোনাভির ও রিবাভাইরিন। গবেষকরা বলছেন এই ওষুধ ত্রয়ী মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার কোভিড-১৯ চিকিৎসা করতে সক্ষম।

এই তিনটি ওষুধের সংমিশ্রণ ভাইরাল শেডিংয়ের সময়কালও হ্রাস করতে কার্যকর। ভাইরাল শেডিং হলো- এমন সময়কাল যখন একজনের দেহে ভাইরাস সনাক্তকরণ সম্ভব হয় এবং তা অন্যের কাছে সংক্রমণযোগ্য। ল্যানচেট জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র থেকে এ তথ্য জানা যায়।

গবেষকরা এ বছরের ১০ই ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ই মার্চের মধ্যে ১২৭ জনকে নিরীক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট করেন। এসব অংশগ্রহণকারীরা চীন ও হংকংয়ের ছয়টি হাসপাতাল থেকে এসেছিলেন, যেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষার পর তাদের কোভিড-১৯ রোগ শনাক্ত করেছেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮৬ জনের একটি দলকে নিয়মিত এই তিনটি ওষুধ দেয়া হয়। অন্যদিকে, বাকী ৪১ জনকে নিয়ন্ত্রিত ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। উপসর্গ দেখা দেয়ার ৫ দিন পর থেকে আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল।

প্রথম দলটিকে লোপিনাভির ৪০০ (মিলিগ্রাম) ও রিটোনাভির ১০০ (মিলিগ্রাম) প্রতি ১২ ঘণ্টা পর পর দেয়া হয়। সঙ্গে প্রতি ১২ ঘণ্টা ব্যবধানে রিবাভাইরিন ৪০০ (মিলিগ্রাম) প্রয়োগ করা হয়। এছাড়াও একদিন অন্তর অন্তর ইন্টারফেরন বিটা-১ বি এর ৪ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক ইউনিটের তিনটি ডোজ দেয়া হয়।

দ্বিতীয় দলটির অংশগ্রহণকারীদের প্রতি ১২ ঘণ্টা ব্যবধানে লোপিনাভির ৪০০ (মিলিগ্রাম) ও রিটোনাভির ১০০ (মিলিগ্রাম) প্রয়োগ করা হয়। এই নিয়মে দু’টি দলের চিকিৎসা টানা ১৪ দিন ধরে চলতে থাকে।

ফলাফলে দেখা গেছে যে, তিনটি ওষুধের যৌথ প্রয়োগ উপসর্গগুলি উপশম করতে, ভাইরাল শেডিংয়ের সময়কাল হ্রাস করতে এবং হাসপাতালে অবস্থানের সময় হ্রাস করতে কার্যকর ও নিরাপদ। তবে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি বমি ভাব দেখা গেছে, যা কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই সেরে যায়।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও শীর্ষস্থানীয় গবেষক কোওক-ইয়ুং ইউয়েন বলেন, “আমাদের পরীক্ষাটি প্রমাণ করে যে, ৩টি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের যৌথ প্রয়োগ হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে রোগীর শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ দ্রুত দমন করতে সক্ষম, উপসর্গগুলি থেকে মুক্তি দিতে পারে এবং অসুস্থতার সময়কাল হ্রাস করে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। তাছাড়া এটি ভাইরাল শেডিং হ্রাস করে।”

তবে তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ইন্টারফেরন বিটা-১ বি বা অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে এর যৌথ প্রয়োগ কোভিড-১৯ আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর তা প্রমাণ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রফেসর ইউয়েন। তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: