ভারতের ভূখন্ড ফের দখল করল চীন

লাদাখের পেট্রোলিং পয়েন্ট (পিপি)-১৪ এর কাছে ফের ভারতীয় এলাকা দখল করে নিয়েছে চীনা বাহিনী। চীন-ভারত উত্তেজনায় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ভারতের পক্ষ নেয়ার পরই চীন এই আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়।

এঘটনায় লাদাখের স্থিতাবস্থা নস্যাৎ করার জন্য চীনকে দোষারোপ করেছে ভারত। যদিও এখন পর্যন্ত চীনকে দখলকৃত ভূখন্ড থেকে ফিরিয়ে দেয়ার হিম্মত দেখাতে পারেনি ভারত।

ভারতের সেনা সূত্রের বরাতে শনিবার আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন পরিকাঠামো তৈরি না করলেও পয়েন্ট ১৪-সহ গোটা এলাকায় চীনা সেনার উপস্থিতির কারণে পেট্রোলিং পয়েন্ট ১০, ১১, ১১-এ, ১২ এবং ১৩-এ পৌঁছাতে পারছে না ভারতীয় সেনারা।

গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় পিপি-১৪-এ চীনা সেনা পরিকাঠামো তৈরির চেষ্টা করায় দুপক্ষে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে। এতে ভারতের ২০ সেনা নিহত হয়। গুরুতর জখম হয় আরও ৭৬ জন ভারতীয় সেনা।

ওই ঘটনার পর চীনা বাহিনী পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ থেকে সরে যায়। কিন্তু গত ১০ দিনের মধ্যে সেখানে ফের ঘাঁটি গেড়েছে লালফৌজ।

আননন্দবাজার আরও জানায়, বর্তমানে পিপি-১৪ এর কাছে বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে ফেলেছে চীনারা। যার মধ্যে পড়েছে বটল-নেক পয়েন্ট বা ওয়াই জংশন পেট্রোলিং পয়েন্ট, যা ভারতের মধ্যে হলেও বর্তমানে চীনের দখলে রয়েছে।

ওই ওয়াই জংশন পয়েন্ট থেকেই পিপি ১০, ১১, ১১এ, ১২ ও ১৩ যাওয়ার রাস্তা। কিন্তু চীনা সেনারা রাস্তাজুড়ে বসে থাকায় আপাতত সেই এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না ভারতীয় সেনারা। ফলে কয়েকশ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে ভারত।

ওয়াই জংশন পয়েন্ট থেকে লাদাখের ব্রুটসে ভারতীয় সেনার ছাউনি ৭ কিলোমিটার দূরে এবং ওই শহরের ওপর দিয়ে চলে গিয়েছে দারবুক-শাইয়োক-দৌলত বেগ ওল্ডি সড়ক, যা চীনের মাথাব্যথার কারণ। বছর দশেক আগেও চীনারা এক বার ব্রুটস পর্যন্ত ঢুকে পড়েছিল।

এদিকে দুদিনের সফর শেষে শুক্রবার দিল্লি ফিরেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ওইদিন রাজনাথ সিংহের সঙ্গে সাক্ষাত করে সীমান্ত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন সেনাপ্রধান এম এম নরবণে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজনাথ।

তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ঔদ্ধত্যপূর্ণ প্রভাবের লাগাম টানতেই চীন উঠে পড়ে লেগেছে। কারণ সম্প্রতি হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের আন্দোলনে বহু ভারতীয় অংশ নিয়েছেন এবং ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ইন্ধন রয়েছে বলে চীন নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় চীনা স্বার্থে নানা ভাবে আঘাত হেনে চলেছে ভারত। চীন এতোদিন এসব সহ্য করে গেলেও এবার লাদাখ সীমান্ত নিয়ে ভারতকে আষ্টেপিষ্টে চেপে ধরেছে। এতে আর যায়হোক, দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো ভারতের বলয় থেকে বেরিয়ে উন্মুক্ত বলয়ে প্রবেশের সুযোগ পাবে।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ