বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চল, পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ

উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাবনা ও রাজশাহীর বেশ কিছু অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, বগুড়ায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনা নদীর পানি। গত কয়েক দিনের প্রবল ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে। দেখা দিয়েছে বন্যা। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

ছবি- সংগৃহিত

সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলের চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, কাজলা, কামালপুর, রহদহ ও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, যমুনা নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয় ১৬ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। সোমবার সকাল ৬টার হিসাব অনুযায়ী নদীর পানি ১৭.২৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৭৬ ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া দুধকোমর নদীর পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি প্রায় দেড় লাখ মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে।

বন্যা কবলিত এসব এলাকার মানুষ গত ৫ দিন ধরে পানিতে ভাসলেও এখন পর্যন্ত সরকারি সহায়তা জোটেনি কারও ভাগ্যে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, তিস্তার ভাঙনে উলিপুরের নাগরাকুড়া টি-বাঁধের ব্লক পিচিংসহ ৫০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া সারডোব, নুনখাওয়া ও মোঘলবাসা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ ১৫টি স্পটে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সেই সঙ্গে পানির চাপে বাঁধ ভেঙে রৌমারী উপজেলা শহর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় প্রায় ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হু হু করে বাড়তে থাকায় ৫০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া সাড়ে তিনশ চর ও নদীসংলগ্ন প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

অনেকেই উঁচু সড়কসহ ভিটা, নৌকা ও চৌকির ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের ভয়াবহ সংকট। কেউ কেউ নিকটবর্তী বাঁধ, রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।

ছবি- সংগৃহিত

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: