ভারত: টাকা দিলে সৎকার, না দিলে হাসপাতালে পড়ে থাকছে লাশ

করোনা তাড়াতে গো-মূত্রের দোকান, কালোবাজারে চড়া দামে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির বিতর্কের পরে এবার ভারতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের সৎকারের জন্য নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। সৎকার সংস্থাগুলোর চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারলে করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ দিনের পর দিন পড়ে থাকছে হাসপাতালে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতায় করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত বেসরকারি হাসপাতালে লাশের সারি জমতে শুরু করেছে। এসব হাসপাতাল বিভিন্ন সৎকার সংস্থার সঙ্গে করোনায় মৃত ব্যক্তির পরিবারকে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। পরে মৃত ব্যক্তির পরিবারের কাছে লাশ সৎকারের বিনিময়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করছে সৎকার সংস্থাগুলো। অনেক পরিবার এ টাকা দিতে পারছে না। ফলে তাদের মৃত স্বজনের লাশ দীর্ঘদিন পড়ে থাকছে হাসপাতালে।

করোনায় মৃত ব্যক্তির সৎকার বিনামূল্যে করার জন্য ভারতীয় সরকারের নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় মৃত ব্যক্তির সৎকারের দায়িত্ব বেসরকারি হাসপাতালই নেবে। কিন্তু সরকারের এই নির্দেশনা মানছেনা হাসপাতালগুলো।

কলকাতার হাওড়া এলাকায় করোনায় মারা যাওয়া এক ব্যক্তির স্বজন জানিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতালে বিল পরিশোধের সময় তাদেরকে সৎকারের জন্য আলাদা ১৫ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এমনকি এটাও জানানো হয়, ওই টাকা দিলেই লাশ চুল্লিতে ঢুকানো হবে এবং শেষ সময় পর্যন্ত সৎকার দেখারও সুযোগ পাবে পরিবারের লোকজন।

কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মৃত এক করোনা রোগীর ছেলে বলেন, বাবা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন ভেবে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তারা ৬ দিনে ৪ লাখ টাকা বিল করেছে। এরপরও তারা সৎকারের জন্য আলাদা ১৫ হাজার টাকা চেয়েছে। ওই টাকা দিতে না পারায় লাশ হাসপাতালের করিডোরে ফেলে রাখা হয়। পরে পরিচিত একজন ধরে ৫ হাজার টাকায় সৎকারের ব্যবস্থা করেছি।

এদিকে যেসব বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে, তারা এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাইছে না। এছাড়া সরকারি পুর-প্রশাসক কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।

এব্যাপারে আমরি গ্রুপের সিইও তথা অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট রূপক বড়ুয়া বলেন, কোভিডে মারা যাওয়া ব্যক্তির সৎকারের ব্যাপারে সরকারি নিয়ম রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স খরচসহ কোভিডে মৃত ব্যক্তির সৎকারে সরকারি হিসেবে ৫ হাজার টাকা খরচ নেয়া হচ্ছে। তবে যদি কেউ বেশি টাকা দাবি করে থাকে, সেটা অন্যায়। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: