২৬ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা জল্লাদ শাহজাহানের মুক্তি

দেশের বিভিন্ন কারাগারে ২৬ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া (৭৩) অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। ৩১ বছর ছয় মাস সাত দিন কারাভোগের পর মুক্ত হলেন তিনি।

রোববার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্ত হন। শাহজাহান তাঁর সাজা থেকে ১০ বছর পাঁচ মাস ২৮দিন ক্ষমা পেয়েছেন।

কারাগার থেকে যখন শাহজাহান বের হয়ে আসেন তখন তার মুখে ছিল হাসি আর পরনে ছিল সাদা শার্ট-প্যান্ট। তিনি বের হওয়ার সময় তার আশপাশে প্রায় ১০-১৫ জন কারারক্ষী ছিলেন।

বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার প্রথম মুহূর্তে ডুকরে কেঁদে ওঠেন শাহজাহান। এরপর একে একে শাহজাহান তার কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, ৩০ বছর অনেক সময়। এতদিন জেল খাটার পর এখন আর কোনো অপরাধ করতে চাই না। আর এখন আমার সক্ষমতা নেই অপরাধ করার।

২৬ জন আসামিকে ফাঁসি দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি বিচার প্রক্রিয়া শেষে কারাগারে সাজা ভোগ করছিলাম। তাই কারাগারে নিয়ম অনুযায়ী সাজা প্রাপ্ত আসামিদের কোন না কোন কাজ করতে হয়। আমি একটু সাহসী ছিলাম বলে আমাকে জল্লাদের কাজে নিয়োগ করা হয়। এসব ফাঁসি আমার সিদ্ধান্তে আমি দেইনি, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি দিয়েছি।

কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তিনি এখন কোথায় যাবেন প্রশ্ন করা হলে জল্লাদ শাহজাহান বলেন, আমার কোন বাড়িঘর নেই। শুনেছি আমার এক বোন ও ভাগিনা আছে। তবে তাদের সঙ্গে আমার কখনো দেখা হয়নি। তবে এখন আমি বসুন্ধরার নর্দ্দা এলাকায় একজনের বাসায় যাচ্ছি। কারাগারে থাকার সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল।

তিনি বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, তিনি যেন আমাকে বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেন। যাতে বাকি জীবন আমি সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারি।

 তার বের হওয়ার আগে ঢাকা কেরানীগঞ্জের জেলার মাহবুবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জল্লাদ শাহজাহান এ পর্যন্ত ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছেন। এতে প্রতি ফাঁসির জন্য তার দুই মাস করে শাস্তি মওকুফ হয়েছে। এছাড়া জেলে কেউ ভালো কাজ না করলে, কারও শাস্তি মওকুফ করা হয় না। তবে শাহজাহান জেলে থাকা অবস্থায় ভালো কাজ করে দশ বছর পাঁচ মাস সাজা কমিয়েছেন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্ব বাজারে বেড়েছে ডলারের মান ও ট্রেজারি বন্ডের সুদহার Jul 16, 2025
img
কিছু কিছু ম্যাচ সারা জীবন মনে থাকে: মোহাম্মদ সিরাজ Jul 16, 2025
img
ঘুষ দিতে গিয়ে মালয়েশিয়ায় এয়ারপোর্টে দুই বাংলাদেশি আটক Jul 16, 2025
img
‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Jul 16, 2025
img
অভিনেতা রবি তেজার বাবা আর নেই Jul 16, 2025
img
ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে রেখে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় : বিআরটিএ চেয়ারম্যান Jul 16, 2025
img
বিসিবি এবার টাইগারদের জন্য নিয়োগ দিল ‘পাওয়ার হিটিং’-এর জনক Jul 16, 2025
img
লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেটের সময়সূচি ঘোষণা Jul 16, 2025
img
ওমান সাগরে ২০ লাখ লিটার তেলসহ ট্যাংকার জব্দ করলো ইরান Jul 16, 2025
img
ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও দাম কমাতে কাজ করছে সরকার: ফয়েজ আহমদ Jul 16, 2025
img
বিমানবন্দরের মারাত্মক ভুলে করাচির যাত্রী পৌঁছে গেলেন সৌদি Jul 16, 2025
img
কন্যাসন্তান পেয়ে জীবন বদলে গেল: সিদ্ধার্থ Jul 16, 2025
img
র‍্যান্ডম পদ্ধতিতে ১৫ হাজার ৪৯৪টি আয়কর রিটার্ন অডিটে এনবিআরের নির্বাচন Jul 16, 2025
img
‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার’ তিন তারকাই এখন কন্যার বাবা-মা Jul 16, 2025
img
বিনোদিনী চরিত্রেই নিজেকে খুঁজে পেলেন শুভশ্রী Jul 16, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করতে ইরানকে আগস্ট পর্যন্ত আলটিমেটাম Jul 16, 2025
img
অবশেষে শুটিং ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা Jul 16, 2025
img
বৃহস্পতিবার ‘জুলাইয়ের গল্প বলা’ অনুষ্ঠান Jul 16, 2025
img
বাহরাইনের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশি দূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ Jul 16, 2025
img
ভারতের পুরনো ভিডিও ছড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শনাক্ত: বাংলাফ্যাক্ট Jul 16, 2025