চলতি অর্থবছর ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ ছাড়িয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থতা, ডলারের বাড়তি দাম ও সুদহার বৃদ্ধিতে সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এ ঋণ উৎপাদনশীল খাতে ব্যয় না হলে, অর্থনীতিতে ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
স্থানীয় উৎসের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয় সরকার। এর বাইরে সঞ্চয়পত্র, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও সর্বজনীন পেনশন স্কিমসহ বিভিন্ন উৎস থেকেও ঋণ নেওয়া হয়। গত আড়াই বছরে ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত দুই খাত থেকেই নেওয়া ঋণের পরিমাণ বেড়েছে।
সবশেষ হিসেব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে মে পর্যন্ত সরকার নিট ঋণ নিয়েছে ৫০ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এ সময় বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগে নেওয়া ১৯ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারল্য সংকটের মধ্যেও সরকারকে এখন ব্যাংক থেকেই ঋণ নিতে হচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘সিকিউরিটি ক্রাইসিসটা অতটা হবে না। ক্যাপিটাল মার্কেটে টাকা এখন তুলনামূলক কম যাচ্ছে। সে দিক থেকেও আমার মনে হয়, যেহতু রেট বেশি পাচ্ছে ব্যাংকগুলোতে সেখানে আরও টাকা আসবে। সরকারের এরকম সময়ে অতিরিক্ত যদি ঋন নিতে হয়, তাহলে হয়ত প্রাইভেট ক্রেডিট ডিমান্ডে কিছুটা ভাটা পড়তে পারে।’
অর্থনীতিদিবরা বলছেন, সরকারের ঋণের বোঝা বাড়লে, এর চাপ পরবে সাধারণ জনগণের উপর। তাই ঋণের অর্থ উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের পরামর্শ তাদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বোঝাটা কার ওপর পড়ছে ঋণ পরিশোধের? আলটিমেট ডেফিসিট হচ্ছে, এতে লোকের করের বোঝা বাড়বে। এখন প্রত্যেকটা পণ্যের ওপর ভ্যাট বসিয়ে দেবে। ফলে চাপটা সাধারণ মানুষের ওপর পড়ছে। আমি মনে করি, সরকারের যতোটা সম্ভব আনপ্রোডাকটিভ ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে, মানে সাশ্রয়ী হতে হবে।’