দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারে মনোযোগ না দিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে অন্তর্বর্তী সরকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ভোজ্যতেলসহ সব পণ্যের সঠিক তথ্য নিশ্চিতে জোর দাবি তাদের।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেট্রোপলিটন চেম্বারের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় এমন অভিযোগ তোলেন ব্যবসায়ীরা।
চলতি অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন করতে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকার কর আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আদায়ে ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি পূরণের সহজ উপায় হিসেবে গেল মাসে শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় এনবিআর। যদিও কিছু কিছু পণ্যে বাড়তি কর প্রত্যাহার হয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, তবে এখনও ফল ও জামাকাপড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেকারি আইটেমে যে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে তাতে মূল্যস্ফীতি আরও উসকে যাবে। গেল দুবছর ধরে সাধারণ মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে রয়েছে। এমন বাস্তবতায় সরকারকে পরোক্ষ কর না বাড়িয়ে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর দিকে হাঁটার পরামর্শ দেন তারা।
বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, ভ্যাট ট্যাক্স আরোপের ফলে ব্যবসা বাণিজ্য কমবে। তাহলে সরকার রাজস্ব পাবে কীভাবে? সরকার ব্যবসায়ীদের পাত্তাই দেয় না। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে ইচ্ছেমতোই ভ্যাট ট্যাক্স আরোপ করে।
সুপারশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ। বর্তমান সরকারের অবস্থা এখন এমন। জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।
দেশের সবচেয়ে বড় শিল্পখাত তৈরি পোশাক মালিকদের অভিযোগ, কর আদায়ের নামে তারা অনেক সময় জুলুমের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া চাঁদাবাজির কারণেও বাজারে বাড়ছে পণ্যের দাম।’
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘আলোচনায় উঠে ভোজ্যতেলের সাম্প্রতিক সংকটের বিষয়টি উঠে এসেছে। তেলসহ আমদানির পণ্য ও তার সরবরাহের সুস্পষ্ট তথ্য সরকারের কাছে থাকতে হবে।’
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘কে কতটুকু সয়াবিন তেল আনলো, কতটুকু বাজারজাত করলো তার তথ্য নেই বলে বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আসছে না।’