‘ধনী ও ক্ষমতাবানদের হস্তক্ষেপ’ ভারতের বিচারব্যবস্থায়

ভারতের প্রধান বিচারপতির রঞ্জন গগৈর  বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ। তদন্তের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পাট্টনায়ককে।

একই সঙ্গে এই তদন্তে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশ, সিবিআই এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানকে।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, ‘বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার এই অভিযোগ এতটাই গুরুতর, যে তার নির্দিষ্ট তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’

ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেরই এক প্রাক্তন নারী কর্মী যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার পর থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।

এরপর উৎসব বইন্স নামের এক আইনজীবী অভিযোগ করেন, প্রধান বিচারপতিকে কালিমালিপ্ত করতে ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে ওঠার জন্য তাকে দেড় কোটি টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। ষড়যন্ত্রের সমস্ত তথ্যপ্রমাণসহ আদালতে একটি হলফনামাও জমা দেন তিনি। সেই অভিযোগই আজ খতিয়ে দেখে বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং বিচারপতি দীপক গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এ পরই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পাট্টনায়েকের নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম আদালত।

এই তদন্তের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগের তদন্তের কোনো যোগ থাকবে না এবং দু’টি তদন্ত আলাদাভাবে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের তদন্তে বিচারপতি ববদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অন্য একটি প্যানেল ইতোমধ্যেই তৈরি করেছে সুপ্রিম কোর্ট।  সেই ঘটনার তদন্তে নোটিশ পাঠানো হয়েছে অভিযোগকারিণীকে।

বৃহস্পতিবার এই অভিযোগের শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের হাতে দেশের শীর্ষ আদালতকে ছেড়ে দেয়া যাবে না।

বিশেষ বেঞ্চের প্রধান অরুণ মিশ্রের কথায়, ‘ধনী ও ক্ষমতাবানদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়ার সময় এসেছে, ওরা আগুনের সঙ্গে খেলছেন। কেউ বিচারব্যবস্থায় কোনো উন্নতি করতে চাইলেই তাকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছেন। খুন করছেন। এটা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।’

আদালত আরো জানায়, ‘গত তিন চার বছর ধরেই ভারতের শীর্ষ আদালতের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। কিন্তু অর্থশক্তি হোক বা রাজনৈতিক শক্তি, কোনো কিছু দিয়েই রিমোট কন্ট্রোলে চালানো যাবে না বিচারব্যবস্থাকে।’

যখনই কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত থাকেন, তখনই বিচারব্যবস্থাকে কালিমালিপ্ত করার খেলা চলে- বিচারব্যবস্থায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগের শুনানির সময় জানায় তিন সদস্যের বেঞ্চ।

আনন্দবাজার জানায়, আইনজীবী উৎসব বইন্সের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টেরই বরখাস্ত হওয়া দুই কর্মীর সাহায্যে চলছিল প্রধান বিচারপতিকে কালিমালিপ্ত করার ষড়যন্ত্র। অনিল অম্বানির একটি মামলায় রায় বদলে দেয়া হয়েছিল এই দুই কর্মীর মদতেই। এরপরই এই দুই কর্মীকে বরখাস্ত করে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হলফনামাতেও উৎসব জানান, এই মামলায় লড়ার জন্য তাকে দেড় কোটি টাকা দেয়ার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছিল।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শিগগিরই পর্দায় আসছে ‘বজরঙ্গী ভাইজান ২’ Jul 16, 2025
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ লাখ নেতাকর্মীর সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী Jul 16, 2025
ভোগান্তির অবসান, মালয়েশিয়ায় এখন থেকে মাল্টিপল ভিসা পাবেন বাংলাদেশিরা Jul 16, 2025
img
গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী Jul 16, 2025
img
‘রামায়ণ’ দেখে কৌশল পাল্টাল ‘গড অব ওয়ার’ নির্মাতারা Jul 16, 2025
img
গোপালগঞ্জকে সঙ্গে নিয়েই নতুন বাংলাদেশ গড়বো: তাসনিম জারা Jul 16, 2025
img
গোপালগঞ্জে আ.লীগ-নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে সেনাবাহিনী Jul 16, 2025
img
নিজ বাড়ি থেকে তারকা দম্পতির মরদেহ উদ্ধার Jul 16, 2025
img
বিশ্ব বাজারে বেড়েছে ডলারের মান ও ট্রেজারি বন্ডের সুদহার Jul 16, 2025
img
কিছু কিছু ম্যাচ সারা জীবন মনে থাকে: মোহাম্মদ সিরাজ Jul 16, 2025
img
ঘুষ দিতে গিয়ে মালয়েশিয়ায় এয়ারপোর্টে দুই বাংলাদেশি আটক Jul 16, 2025
img
‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Jul 16, 2025
img
অভিনেতা রবি তেজার বাবা আর নেই Jul 16, 2025
img
ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে রেখে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় : বিআরটিএ চেয়ারম্যান Jul 16, 2025
img
বিসিবি এবার টাইগারদের জন্য নিয়োগ দিল ‘পাওয়ার হিটিং’-এর জনক Jul 16, 2025
img
লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেটের সময়সূচি ঘোষণা Jul 16, 2025
img
ওমান সাগরে ২০ লাখ লিটার তেলসহ ট্যাংকার জব্দ করলো ইরান Jul 16, 2025
img
ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও দাম কমাতে কাজ করছে সরকার: ফয়েজ আহমদ Jul 16, 2025
img
বিমানবন্দরের মারাত্মক ভুলে করাচির যাত্রী পৌঁছে গেলেন সৌদি Jul 16, 2025
img
কন্যাসন্তান পেয়ে জীবন বদলে গেল: সিদ্ধার্থ Jul 16, 2025