রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় মো. ফারুক মিয়া (৫৫) নামে এক প্রবাসীর কাছ থেকে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং লুণ্ঠন হওয়া মালামাল ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।শনিবার (৮ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন: পটুয়াখালীর মো. শের আলীর ছেলে মো. আল আমিন হাওলাদার (৪০) ও মো. আনোয়ার হোসেন প্যাদার ছেলে মো. ওমর ফারুক (৩৪), শরীয়তপুরের সুরুজ মিয়া বেপারীর ছেলে মো. ফারুক বেপারী (৩৯), মৃত মজিদ আকন্দর ছেলে মো. মানিক (২৭), আব্দুস সামাদের ছেলে জহিরুল ইসলাম জহির (৪৮) ও দুদু মিয়া সরদারের ছেলে মো. বারেক (৪৪), ফরিদপুরের মৃত শেখ মজিবের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম শেখ (৪১) এবং ময়মনসিংহের মো. খোকনের ছেলে আল-আমিন আহম্মেদ (৪০)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মো. ফারুক মিয়া গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুবাই থেকে হযরত শাহজালার বিমানবন্দরে আসেন। রাত অনুমান ২টায় বিমানবন্দর থেকে তিনি বাসা নিউমার্কেট থানার অধীন হাতিরপুলের উদ্দেশে একটি সাদা প্রাইভেটকার ভাড়া করে রওনা করেন। রাত ৩টার দিকে বাসার সামনে উপস্থিত হলে তাকে অনুসরণ করা একটি কালো রঙয়ের নোহা মাইক্রোবাস তার গাড়ির পথরোধ করে মাইক্রোবাসটি থেকে র্যাবের পোশাক পরা ৫ থেকে ৬ জন লোক নামেন।
নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে তার সঙ্গে থাকা প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে চলে যায় ডাকাতরা। সেইসঙ্গে তাকে ঢাকা মহানগেরর বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমমি দিয়ে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে হাতিরঝিল এলাকায় নামিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় করা মামলায় নিউমার্কেট থানা পুলিশ সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের শনাক্ত করে। পরে বরিশাল, পটুয়াখালী, মাদারিপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৭ জনকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক তদন্তে এ মামলার ঘটনায় আসামিদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকালে পুলিশ জানতে পেরেছে, গ্রেফতার আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। তারা বিদেশ থেকে স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকে অনুসরণ করে রাজধানীতে তাদের সুবিধাজনক স্থানে পথরোধ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা ব্যাব, ডিবি ইত্যাদি পরিচয় দিয়ে সর্বস্ব লুট করে নেয়। একই উপায়ে ওই ডাকাত চক্র রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ১২ থেকে ১৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাতিতে ব্যবহার করা মাইক্রোবাস, ব্যাবের কোটি, হ্যান্ডকাফ, হকস্টিক ও বেতের লাঠি, ডাকাতি মালামালের নগদ টাকা ৩০ হাজার টাকা, এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্যামসাং স্মার্ট মোবাইল ফোন এবং একটি ১৫০ মি.লি সিম্পল ময়শ্চরাইজিং ফেসিয়াল জব্দ ও উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী লুণ্ঠিত আরও মালামাল উদ্ধার ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার প্রচেষ্ট অব্যাহত আছে।
এমআর