ডিএমটিসিএল কর্মীদের মারধর: পুলিশের ২ সদস্য বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি গঠন

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চার কর্মীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এমআরটি পুলিশের এক এসআইসহ দুজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও করা হয়েছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) সচিবালয় স্টেশনে এসব তথ্য জানান মেট্রোরেলের এমডি ফারুক আহমেদ।

রোববার (১৬ মার্চ) বিকেলে এমআরটি পুলিশের হাতে মেট্রোরেলের চার কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হন। এ ঘটনায় কর্মবিরতির ডাক দেন কর্মীরা। ফলে সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচলে নানা জটিলতা তৈরি হয়। বিশেষ করে যাত্রীদের ভাড়া আদায় করার ব্যবস্থা কোথাও কোথাও অকার্যকর হয়ে পড়ে।

পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে প্রায় দেড় ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের পর প্রত্যাহার করে আবারও টিকিট ব্যবস্থা চালু করেন মেট্রোরেলের কর্মীরা। কর্মবিরতি প্রত্যাহারে সকাল ১০টার পর মোটামুটি মেট্রোরেলের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।

এরআগে, রোববার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এতে বলা হয়, গত ১৬ মার্চ বিকেল সোয়া ৫টায় ডিএমটিসিএলের চারজন সহকর্মী এমআরটি পুলিশ দ্বারা মৌখিকভাবে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য। মূলত আনুমানিক বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে দুজন মহিলা কোনো ধরনের পরিচয়পত্র না দেখিয়েই সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে অবস্থিত সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেট ব্যতীত সুইং গেট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান।

তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন ও একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে ঠিক একইভাবে দুইজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে সুইং গেট না লাগিয়ে চলে যান, উক্ত বিষয়ের কারণ তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা আগের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএর সঙ্গেও ইএফও তে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএর কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে এবং কর্মরত আরেকজন টিএমওর শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করে।

উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীরা বিষয়টি অনুধাবন করে উক্ত এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসে। এ ধরনের ঘটনা মেট্রোরেলের কর্মপরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। বর্তমানে আহত (রাইফেল দিয়ে কাঁধে আঘাত করা হয়) সিআরএকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং টিএমও (যাকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে হেনস্তা করা হয়, গুলি করার জন্য বুকে রাইফেল ধরা হয়) তিনি উক্ত ঘটনার পর ঘটনার বিবৃতি দেয়ার পর বাসায় যাওয়ার পথে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এসএন 

Share this news on: