সেনাবাহিনী পক্ষে ছিল বলেই হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে : রিজভী

১৯৭১, ’৯০ আন্দোলনে এবং ২০২৪ সালের আন্দোলনে সেনাবাহিনী দেশের জনগণের পক্ষে থাকার কারণেই আমাদের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে। তাই এই প্রতিষ্ঠানকে মর্যাদা দিতে হবে আমাদের সম্মান দেখাতে হবে, বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

গত রোববার (২৩ মার্চ) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ- এ্যাব এর সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নেতাদের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় সাধারণ পথচারী ও প্রান্তিক মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণকালে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। দেশ ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। তাই আমাদের সবাইকে সহনশীল হতে হবে। গণতন্ত্রকে মজবুত শক্তিশালী করার জন্য, আরও সামনে যে কাজ আছে অর্থাৎ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন, একটি ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমাজ, আইনের শাসন এবং প্রতিটি মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার যে গণতান্ত্রিক সমাজ সেই সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের এখন লড়াই করতে হবে। আমাদের সংগ্রাম হচ্ছে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আমাদের সংগ্রাম হচ্ছে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। তাই আমাদের আলোচনা কথাবার্তায় এমন সহনশীল দেখাতে হবে যাতে রাষ্ট্রের মধ্যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।

রিজভী বলেন, আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে যেসব প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে আমাদের দ্বারা সেইসব প্রতিষ্ঠানে যেন কোনো ক্ষতি না হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে। ’৭১ সালে আমাদের দেশের সেনাবাহিনী সর্বোপরি এদেশের জনগণের সঙ্গে ছিল এবং সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা মেজর তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সব সময় দেশের জনগণের পক্ষে কাজ করেছে। আমরা ’৯০-এর আন্দোলনেও দেখেছি আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ২০২৪ সালেও আমরা দেখেছি এই সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা জনগণের পক্ষে থাকার কারণেই আমাদের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে। তাই এই প্রতিষ্ঠানকে মর্যাদা দিতে হবে, আমাদের সম্মান দেখাতে হবে।

সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তনের কোনো পথ যাতে না থাকে সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজগুলো আমাদের করতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল ছাত্র জনতা, শ্রমিকরা প্রত্যেকে একযোগে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রের কাঠামো আরও মজবুত করতে হবে। শক্তিশালী গণতন্ত্র আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রতিটি নাগরিক যেন তার প্রাপ্য স্বাধীনতা পায় এরকম একটা রাষ্ট্র কাঠামো তৈরি করতে হবে।

এ্যাবের সদ্য সাবেক মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর নির্দেশনায় আমরা সাধারণ পথচারী ও প্রান্তিক মানুষের মাঝে আজ ও আগামী দুই দিন ইফতার বিতরণ কর্মসূচি পালন করব।

সবশেষে এ্যাব-এর সব নেতাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, আমরা এক দুর্বিষহ সময় অতিক্রম করে বর্তমান পরিস্থিতিতে এসে উপনীত হয়েছি। পূর্বে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথা বললে তার বেঁচে থাকা খুবই কঠিন ছিল। তাকে নানা বিধি মিথ্যা মামলায় হয়রানি করে তার পার্মানেন্ট ঠিকানা হতো কারাগারের মধ্যে অথবা গুম, খুনের শিকার হতো। এখন আমাদের সংগ্রাম হবে ন্যায় বিচার ও পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের আলোচনা এবং কথা বার্তার মধ্যে এমন সহনশীলতা দেখাতে হবে যাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না হয়।

আরএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাতাসেই এখন চলছে জাহাজ, চীনের হাতে বাস্তব হলো কল্পনা Jul 06, 2025
img
ডা. তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরা ছবি সম্পর্কে যা জানা গেল Jul 06, 2025
img
রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে বেডরুম পর্যন্ত তাহলে ফেসবুকই নিয়ন্ত্রণ করে? : মম Jul 06, 2025
img
‘তুই মুম্বাইয়ে থেকে যা’, এন্ড্রু কিশোরকে অনুরোধ করেছিলেন আর.ডি. বর্মণ Jul 06, 2025
img
ক্যান্সারের কাছে হার মানলেন জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা Jul 06, 2025
img
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর যোদ্ধার সংখ্যা ফের ৪০ হাজারে পৌঁছেছে Jul 06, 2025
img
৭৮ বলে ১৪৩ রান করে শান্তর রেকর্ড ভাঙলেন সূর্যবংশী Jul 06, 2025
মহাকাশে মিলল বিশাল ও পানিসমৃদ্ধ নতুন গ্রহ! Jul 06, 2025
img
‘রঘু ডাকাত’-এর শুটিং শেষ, আবার কি ছোট পর্দায় ফিরবেন ইধিকা? Jul 06, 2025
img
ফের ট্রলের শিকার আদিপুরুষ, রামায়ণ টিজারে বাজিমাত Jul 06, 2025
img
রামায়ণে রাবণ রূপে যশ, প্রথমে পছন্দ ছিলেন হৃতিক রোশন Jul 06, 2025
জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ঢাল হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ আলম Jul 06, 2025
img
এই অভিনেত্রীর প্রেমে পড়ে আর বিয়েই করেননি রতন টাটা Jul 06, 2025
img
বাংলাদেশের বিপক্ষে হারলেও হাসারাঙ্গার বিশ্বরেকর্ড Jul 06, 2025
img
জুনিয়র এনটিআরের বিপরীতে তিনবার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন আলিয়া Jul 06, 2025
img
মুখ ঢেকে বাজারে গিয়ে বলি, ‘এটার দাম কত’: মৌসুমী হামিদ Jul 06, 2025
img
ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে ৮ হাজার ২৩০ কোটি ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা Jul 06, 2025
img
সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১৪৫৪ জন Jul 06, 2025
img
ছেলের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ক্ষমা চাইলেন বিজয় সেতুপাতি Jul 06, 2025
img
পাঠ্যপুস্তকে ভুল সংশোধনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পরামর্শ চাইল শিক্ষা মন্ত্রণালয় Jul 06, 2025