গ্রিনল্যান্ড সফরের পরিকল্পনা করেছেন উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিরা। এতে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের স্ত্রী ঊষা ভ্যান্সের সাথে থাকবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মাইক ওয়াল্টজ। হোয়াইট হাউসের এমন ঘোষণায় ক্ষুব্ধ গ্রিনল্যান্ডের রাজনীতিবিদরা। তারা বলছেন, গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়ে ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষার বন্দোবস্ত করতেই এই সফর আয়োজন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
হোয়াইট হাউসের তথ্যমতে, চলতি সপ্তাহেই গ্রিনল্যান্ডে সাংস্কৃতিক সফরে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের স্ত্রী উষা ভ্যান্স। অন্যদিকে, কাছাকাছি কিংবা একই সময়ে ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালটজও আলাদাভাবে দ্বীপটিতে সফর করবেন।
তাদের এই সফরকে ‘উস্কানিমূলক’ আখ্যা দিয়ে গ্রিনল্যান্ডের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মুটে বি এগেদে বলেন, ‘তাদের কোনো বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাহলে কিসের ভিত্তিতে ট্রাম্প প্রতিনিধিরা গ্রিনল্যান্ডে আসছেন?’ ঊষা ভ্যান্স ও মাইক ওয়াল্টজের সফর নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন গ্রিনল্যান্ডের সম্ভাব্য নতুন প্রধানমন্ত্রী জেনস-ফ্রেডরিক নিলসেনও।
বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড আর্কটিক ও আটলান্টিক মহাসাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এটি প্রায় ৩০০ বছর ধরে ডেনমার্কের অধীনে থাকলেও অভ্যন্তরীণ প্রশাসন স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়। দ্বীপটিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন নিরাপত্তার পাশাপাশি গ্রিনল্যান্ডের মূল্যবান খনিজ সম্পদের দিকেও আগ্রহী।
ট্রাম্প এর আগেও বলেছেন, তিনি গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের দখলে নিতে চান। সম্প্রতি এক বৈঠকে তিনি ফের জানান, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়া খুবই জরুরি। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজ বলেন, ‘আর্কটিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রয়েছে। তাই এই সফরের মাধ্যমে তারা সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় খুঁজবেন।’
গ্রিনল্যান্ড স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হলেও এটি ডেনমার্কের রাজতন্ত্রের অধীনস্ত দেশ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডেনমার্ক থেকে গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতা চাওয়া ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জয় পেয়েছে। কাজেই নতুন নির্বাচিত প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতেও ঊষা ভ্যান্সের সফর জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
তবে, জনমত জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গ্রিনল্যান্ডবাসী যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়ার ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছে। মার্কিন প্রতিনিধিদের সফর এবং ট্রাম্পের মন্তব্য দ্বীপটির রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দারা।
এসএস/টিএ