সুদানের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের একটি মার্কেটে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা দ্য ইমারজেন্সি লইয়ার্স জানিয়েছে, তুররাহ মার্কেটে চালানো এই হামলায় বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন এবং ঘটনাটিকে তারা "ভয়াবহ গণহত্যা" হিসেবে বর্ণনা করেছে।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সংঘর্ষে বেসামরিক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থাটি জানিয়েছে, উভয় পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলার ফলে দেশটিতে মানবিক সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী দ্য র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর হামলায় মার্কেটের বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামলায় নিহত লোকজনের মরদেহ বিকৃত হয়ে গেছে। মার্কেটের ধ্বংসাবশেষ থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়ছে।
তবে দেশটির সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানানোর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, তারা কেবল শত্রুপক্ষের অবস্থান লক্ষ্য করে বৈধ হামলা চালিয়েছেন।
দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের বিরুদ্ধে বেসামরিক অঞ্চলে বার বার হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। দারফুরের বেশিরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আরএসএফ। দেশটির এই আধা-সামরিক বাহিনী দারফুরে ড্রোন মোতায়েন করেছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে প্রতিনিয়ত আরএসএফের অবস্থান লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আরএসএফ।
দারফুর অঞ্চলের তুররাহ মার্কেটে সেনাবাহিনীর হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা কিংবা হামলারন তারিখ সঠিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা এল-ফ্যাশার শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে তুররাহ মার্কেটের অবস্থান।
দারফুরের স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা দারফুর ইনিশিয়েটিভ ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস বলেছে, ওই মার্কেটে সোমবার ঘটনা ঘটেছে হামলার। ‘‘যুদ্ধ শুরুর পর’’ গতকালের ওই হামলা সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
২০২৩ সাল থেকে চলা সুদানের দুই বাহিনীর সংঘাতে কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে, সামরিক বাহিনীর সংঘাতের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে সুদান।
এসএস/টিএ