বিদায়ী দিনে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজিকে চাকরি স্থায়ীকরণ ও বকেয়া বেতনের দাবিতে অবরুদ্ধ করে রাখেন হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীরা।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় মুক্ত হয়েছেন তিনি।

হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তত্ত্বাবধায়কের বিদায়ী দিনেও কর্মচারীদের বেতন নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। তখন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া ও নিরাপত্তাকর্মীরা আন্দোলন শুরু করেন। তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আশ্বাস দিয়ে শুধু কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। আজ বিদায় নিতে এসে কোনো জবাবদিহিতা ছাড়াই চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

এক আন্দোলনকারী বলেন, দিনরাত খেটে কাজ করছি, অথচ বেতন নেই। পরিবার নিয়ে রাস্তায় নামার উপক্রম হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো সমাধান করনি। সবসময় শুধু আশ্বাস দিয়ে আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আরেক কর্মচারী বলেন, মাসের পর মাস আমরা বেতন পাচ্ছি না। অথচ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা শুধু আশ্বাস দেন। বাস্তবে কিছুই করেন না। আজকে সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে এমনটি করেছে।

এদিকে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে যান ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরিন কান্তা, ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী ও ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান। তারা দীর্ঘ আলোচনার পর আন্দোলনকারীদের দাবির দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তত্ত্বাবধায়ককে মুক্ত করেন।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা তার জীবনের শেষ কর্মদিবসে এমন পরিস্থিতির শিকার হবেন, এটি মেনে নেওয়া যায় না। এমন আচরণ শুধু দুঃখজনক নয়, লজ্জাজনকও। তবে কর্মচারীদের দাবিও যৌক্তিক। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখব। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। হাসপাতালের নতুন তত্ত্বাবধায়ক যেন বিষয়টি সুরাহা করেন, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ফেনী জেনারেল হাসপাতালের প্রায় অর্ধশতাধিক আউটসোর্সিং কর্মচারী দৈনিক সেবামূলক কাজে নিয়োজিত থাকলেও তাদের চাকরি অস্থায়ী এবং বেতন প্রাপ্তি অনিয়মিত। এ অব্যবস্থাপনা ঘিরে কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এর আগেও একাধিকবার কর্মবিরতিসহ তারা আন্দোলন করে দাবি উত্থাপন করেন।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
১৪ বছরের প্রচেষ্টার পর আসিয়ানের সদস্যপদ পেল পূর্ব তিমুর Oct 26, 2025
img

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ

ভারত সাথে ম্যাচ দিয়ে শেষ হচ্ছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রা Oct 26, 2025
img
শ্বশুরের হাতে প্রাণ গেল পুত্রবধূর Oct 26, 2025
img
মালয়েশিয়া দিয়ে ট্রাম্পের ৫ দিনের এশিয়া সফর শুরু Oct 26, 2025
img
এমবাপের থেকে আরও বেশি কিছু চান রিয়াল কোচ আলোনসো Oct 26, 2025
img
নির্বাচন নিয়ে নতুন করে আইন তৈরি করা হয়েছে : মাসুদ কামাল Oct 26, 2025
img
আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় ব্যবধানে কনোলির জয় Oct 26, 2025
img
যুদ্ধবিরতির পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল ৯৩ ফিলিস্তিনির Oct 26, 2025
img
জাতিসংঘ এখন কাজ করছে না, নিরাপত্তা পরিষদ অকার্যকর: লুলা Oct 26, 2025
img
জাতি মূল্যায়ন করবে আমরা কী করতে পেরেছি, কী পারিনি : ধর্ম উপদেষ্টা Oct 26, 2025
img
জিরাফ শূন্য হয়ে গেল গাজীপুর সাফারি পার্ক Oct 26, 2025
img
গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে বিএনপি: সেলিম ভূঁইয়া Oct 26, 2025
img
বরুশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দাপুটে জয় বায়ার্ন মিউনিখের Oct 26, 2025
img
৩ দাবিতে ডাকসুর বিক্ষোভ ও রেজিস্ট্রার ভবন ঘেরাও আজ Oct 26, 2025
img
পাবনায় বাঁশবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল ৩ জনের Oct 26, 2025
img
জুলাই হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক পিপিকে আদালতে তোলা হবে আজ Oct 26, 2025
img
আজ ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী Oct 26, 2025
img

চানখারপুলে ছয় হত্যা

হাবিবুরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ১২তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ Oct 26, 2025
img
স্বর্ণ কিনবেন? জেনে নিন আজকের বাজারে স্বর্ণের দাম Oct 26, 2025
img
বৃষ্টিহীন ঢাকায় আজও থাকবে গরমের দাপট Oct 26, 2025