সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে অনীহা, ৩১৬ মিলের নিবন্ধন বাতিল

দিনাজপুরে সদ্য শেষ হওয়া আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় ৩১৬টি মিলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক আফিস আদেশে এসব মিলের তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্র জানায়, আপদকালীন মজুত গড়তে গত বছর ১৭ নভেম্বর শুরু হয় আমন সংগ্রহ অভিযান। সিদ্ধ চাল ও ধান সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং আতপ চাল সংগ্রহের সময় ধরা হয়েছিল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। যেখানে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৭ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন। অন্যদিকে সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২ হাজার ৮৭২ দশমিক ৮১০ মেট্রিক টন এবং আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৮০৫ দশমিক ৯৪০ মেট্রিক টন। মৌসুমে ধান-চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল ৯১১টি সিদ্ধ চালকল এবং ৮৩টি আতপ চালকল।

মৌসুম শেষে এসব চুক্তিকৃত মিল থেকে সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে ৪৮ হাজার ৭২৪ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ। আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ৩০৬ দশমিক ৪৬০ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৬ শতাংশ এবং ধান সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার ১৩ শতাংশ।

কয়েকজন মিল মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে ধানের দাম বেশি ছিল। অন্যদিকে চাল উৎপাদনেও খরচ বেশি পড়েছে। গত কয়েক বছর থেকে মিলাররা লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করে আসছে। সরকার যে দর দিয়েছে তাতে করে প্রতি কেজিতে আমাদেরকে লোকসান গুনতে হয় ৫ থেকে ৬ টাকা। লোকসান গুনতে গুনতে অনেক মিল মালিকেরই পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

মিল মালিকের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে বাংলাদেশ মেজর ও অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ধান এবং চালের দর নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। মিল মালিকরা তো লোকসান গুনেই আসছেন। সরকারের উচিত ধান-চালের দামে সামঞ্জস্য রেখে সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষক ও সব মিল মালিককে বাধ্য করা। নিবন্ধন বাতিল করে যদি পরবর্তীতে আবার বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নানা হয়রানি করা হয় সেটি সমীচীন হবে না।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, জেলায় চুক্তিযোগ্য সিদ্ধ চালকলের সংখ্যা ১ হাজার ২১০টি এবং আতপ চালকল মিলের সংখ্যা ১০টি। এবার চুক্তিকৃত সিদ্ধ চালকল মিলের সংখ্যা ৯১১টি এবং আতপ চালকল ৮৩টি। একাধিকবার তাগাদা দিয়েও অনেকে চুক্তিবদ্ধ হননি। এসব মিলের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত খাদ্য বিভাগের এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
'যারা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন, তারা তো এলিয়েন' Apr 20, 2025
img
ভারত স্থগিত করল বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল প্রকল্প Apr 20, 2025
img
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ Apr 20, 2025
img
ভারতের সহায়তা ছাড়া তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজ নয়: পরিকল্পনা উপদেষ্টা Apr 20, 2025
img
নির্বাচনকালীন তিন মাসের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমেদ Apr 20, 2025
img
যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেবেন তারা ঘরে বসে আঙুল চুষবে? : জি এম কাদের Apr 20, 2025
img
স্বস্তির বাতাস বইছে রিজার্ভে Apr 20, 2025
img
'জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার যুবক Apr 20, 2025
img
গাজায় আরও ৩০ হাজার তরুণকে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ Apr 20, 2025
img
ছোট ছেলে আব্রামের পেছনে মাসে কত খরচ শাহরুখের Apr 20, 2025