নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব দিয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। প্রতিবেদনে এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নারীর স্বার্থ ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে করণীয় তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, রাজনৈতিক দলভিত্তিক স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন রহিত করা। জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করা। পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত শাসনব্যবস্থা বলবৎ থাকবে এবং হেডম্যান বা কারবারিদের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা। সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের মেয়াদে করণীয় উল্লেখ করে বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ প্রতিকার ও নাগরিকদের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা ও বাজেট বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। স্থানীয় সরকারের সব আইন একীভূত করে সব পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে নারীদের অংশগ্রহণ সামঞ্জস্যপূর্ণ করা।
নারী ও মেয়েশিশুর জন্য সহিংসতামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে করণীয়তে বলা হয়, নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনগুলো পর্যালোচনা করে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংশোধন করা ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। অভিযোগ প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যে সব আদালত ও থানায় নারী, শিশু, বয়স্কসহ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য হেল্পডেস্ক স্থাপন ও সক্রিয় করা। তদন্ত ও বিচার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, থানা, হাসপাতাল ও আদালত ইত্যাদি নারীবান্ধব করতে ইতোমধ্যে প্রণীত প্রজ্ঞাপনগুলো বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করা।
অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের নভেম্বরে ‘নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন পারভীন হককে প্রধান করে ১০ সদস্যের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন— ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।
এসএম/এসএন