বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নারী অধিকার, শিক্ষানীতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে সরকারের সাম্প্রতিক অবস্থান এবং নানা বিতর্কিত প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আছাড়াও তিনি বলেন, “তোমরা আমাদের মাথায় আর কাঁঠাল ভেঙে খেতে পারবা না।”
বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় উলামা-মাশায়েখ-আইম্মা পরিষদের সেমিনারে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. শফিক বলেন, “আমরা দ্বীন ও সমাজের সকল কল্যাণকর কাজ একসাথে করতে চাই। আমাদেরকে বিভক্ত করে, টুকরা টুকরা করে বারবার ব্যবহার করা হয়েছে। এবার আর তা হতে দেওয়া যাবে না। এখন সময় এসেছে, জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে নেওয়ার।”
নারী উন্নয়ন নীতিমালার নামে কুরআনের বিধান নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “কেউ কুরআনের সংস্কার চায়—এটা কতটা দুঃসাহসিক চিন্তা! কুরআন তো আল্লাহ নাজিল করেছেন, আর তার সংরক্ষণের দায়িত্বও তিনিই নিয়েছেন। এটা কোনো সরকারের এজেন্ডা হওয়ার কথা নয়, এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো শক্তি কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে কুরআনের আয়াত পরিবর্তনের মতো স্পর্শকাতর ইস্যু সামনে আনার উদ্দেশ্য হলো জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা এবং ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে আরেকটি শক্তিকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া।
শৈশবে ধর্মীয় শিক্ষা তথা মক্তব শিক্ষাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনার অভিযোগও তোলেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, “এক সময় শিশুরা মক্তবে যেত, তারপর স্কুলে। এখন পরিকল্পিতভাবে সেই ধারাটিকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ইসলামি চিন্তা-চেতনা ধ্বংস করার অপচেষ্টা চলছে।”
নারীর অধিকারের নামে সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার ভাষায়, “নারীদের অধিকার সমান বলেই যদি ধরা হয়, তাহলে কোটা কেন থাকবে? কোটার কথা তখনই আসে যখন কেউ পিছিয়ে থাকে। নারীরা এই সমাজে পিছিয়ে নয়, বরং তারা আমাদের মা, বোন, কন্যা—সম্মানের প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, “নারীর নামে সমাজে ফাটল ধরানোর চেষ্টা চলছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে প্রশ্নবিদ্ধ করে আদালতে মামলা ঠেসে দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।”
নারীর অধিকার রক্ষায় প্রস্তাবিত কমিশন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ডা. শফিক বলেন, “এই কমিশন ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষদের বাদ দিয়ে গঠিত হয়েছে। তাই একে আমরা গ্রহণ করবো না। আমরা আন্দোলনে যেতে চাই না, কিন্তু বাধ্য হলে যাব।”
এসএম/টিএ