পাকিস্তানি নারীকে বিয়ে করার কারণে বরখাস্ত হওয়া সিআরপিএফ জওয়ান মুনির আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি বিয়ের আগে যথাযথ নিয়ম মেনে বাহিনীর সদর দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন। হঠাৎ করে চাকরি হারানোয় হতবাক আহমেদ এখন আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলে জানিয়েছেন।
জম্মুর ঘরোটা এলাকার বাসিন্দা আহমেদ ২০১৭ সালে সিআরপিএফ-এ যোগ দেন। তার কথায়, "আমি নিয়ম মেনে সব কিছু করেছি। আমি নিশ্চিত, আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাব।"
সিআরপিএফের অভিযোগ, আহমেদ তার বিয়ের তথ্য গোপন করেছেন এবং তার স্ত্রী মিনাল খানকে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নিজের বাড়িতে রেখেছেন। বাহিনীর মতে, এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
মুনির আহমেদ জানান, তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাহিনীকে জানিয়েছিলেন, তিনি পাকিস্তানি নাগরিক মিনাল খানকে বিয়ে করতে চান। বাহিনী তার কাছে পাসপোর্ট, বিয়ের কার্ড ও হলফনামার মতো বেশ কিছু নথি চায়। তিনি নিজের, তার পরিবারের সদস্যদের ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের হলফনামাসহ সব কিছু জমা দেন। পরে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল সিআরপিএফ সদর দপ্তর থেকে লিখিতভাবে বিয়ের অনুমতি পান।
২০২৪ সালের ২৪ মে অনলাইনে (ভিডিও কলে) তাদের বিয়ে হয়। এরপর তিনি বিয়ের ছবি, নিকাহনামা ও বিয়ের সনদ তার ব্যাটালিয়নে জমা দেন।
মিনাল ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারতে প্রবেশ করেন একটি স্বল্পমেয়াদি ভিসায়, যা শেষ হয় ২২ মার্চ। এরপর তারা লং টার্ম ভিসার জন্য আবেদন করেন এবং হাইকোর্ট মিনালের দেশে ফেরত যাওয়া আপাতত স্থগিত রাখে। বর্তমানে তিনি আহমেদের বাড়িতেই আছেন।
চাকরি হারানোর প্রসঙ্গে আহমেদ বলেন:
“আমি প্রথমে সংবাদমাধ্যম থেকে বরখাস্ত হওয়ার খবর পাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই অফিসিয়ালি চিঠি পাই। বিষয়টা আমার ও পরিবারের জন্য চরম ধাক্কা ছিল, কারণ আমি নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়েছিলাম।”
ছুটি শেষে আহমেদ তার ডিউটিতে ফিরে যান। কিন্তু ২৫ মার্চ তাকে হঠাৎই ভোপালের ৪১ নম্বর ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়, কোনো প্রস্তুতির সময় না দিয়ে। তিনি ২৯ মার্চ সেখানে যোগ দেন এবং সব নথিপত্র আবার জমা দেন, যেখানে তার বিয়ের তথ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। এমনকি ব্যাটালিয়নের রেকর্ড বইতেও তিনি তা লিখে রাখেন।
“আমি আদালতে যাচ্ছি,” বলেন মুনির আহমেদ, “আমি বিশ্বাস করি, বিচার ব্যবস্থা আমার পক্ষেই থাকবে।”
এফপি/এসএন