ফিলিস্তিন থেকে ইসরায়েলকে সাহায্যের বার্তা

যুদ্ধ ও আগ্রাসনের মুখে দীর্ঘদিন টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে আসা একটি জাতি—স্বজন হারানোর বেদনা যাদের প্রতিদিনের বাস্তবতা—এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে সেই রাষ্ট্রের প্রতি, যে বহু বছর ধরে তাদের নিঃশেষ করতে চেয়েছে। ইসরায়েলে যখন দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, ঠিক সেই সময়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এসেছে এক মানবিক সহায়তার প্রস্তাব, যা শুধু বিস্ময়কর নয়, বরং ইতিহাসে বিরল এক উদাহরণ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।

ইসরাইলের জেরুজালেম সংলগ্ন পাহাড়ি অঞ্চল পড়ছে ভয়াবহ দাবানলে। দাবানলের আগুন ছড়িয়ে পড়াচ্ছে বনভূমি, গ্রাম ও বসতিতে। আগুনের তীব্রতা এমন যে দেশটির ফায়ার সার্ভিসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, “এটা হতে পারে ইসরাইলের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ আগুন।” পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে দিন-রাত পরিশ্রম করেও আগুনের বিস্তার রোধ করতে পারছে না তারা।

এই সংকটময় মুহূর্তে সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের দিকে হাত বাড়িয়েছে ইসরাইল। ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠানোর। আবেদন করা হয়েছে গ্রিস, সাইপ্রাস ও বুলগেরিয়ার দিকেও।আর এমন সময় এক অবিশ্বাস্য প্রস্তাব আসে সরাসরি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।

টাইমস অফ ইসরাইলের বরাতে জানা যায়, জেরুজালেম অঞ্চলে আগুন নিভাতে ফিলিস্তিনি অগ্নিনির্বাপক দল পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে তারা। যে অঞ্চল একসময় ইসরাইলের ট্যাংক আর বুলডোজারের থরথর কেঁপেছে, সেখানেই এবার সাহায্য নিয়ে ছুটে যেতে চায় ফিলিস্তিনিরা।

তবে ইসরাইল এখনো সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। অতীতেও বড় ধরনের দাবানলে ফিলিস্তিনের দলগুলো পাশে দাঁড়িয়েছিল।এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “এই আগুন শুধু বনভূমির নয়। এটা উল্টো দিকে ছুড়ে দিয়েছে একটি আয়না। যে আয়নায় দেখা যায় এক বর্বর জাতির নিষ্ঠুর মুখ। আর তার সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা এক মানবিক হাত। যেটা এসেছে ফিলিস্তিন থেকে।”

এটাই হয়তো ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মান্তিক, অথচ সবচেয়ে গৌরব উজ্জ্বল মুহূর্ত,যেখানে ঘৃণার বিপরীতে ভালোবাসা দাঁড়ায়, আর যেখানে আগুনের বিপরীতে এগিয়ে আসে সেই মানুষটাই, যাদের হৃদয়েই একসময় সবচেয়ে বড় আগুন জ্বালানো হয়েছিল।

আরএ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

বসুন্ধরা গ্রুপ নিয়ে যা বললেন নাহিদ Jul 08, 2025
বাংলাদেশিদের অবিশ্বাস্য কম খরচে গোল্ডেন ভিসা দেবে দুবাই Jul 08, 2025
১০ মিনিটে বাংলাদেশের আলোচিত সব খবর Jul 08, 2025
img
দেশে অনেক অগ্রগতি হচ্ছে, সঙ্গে হতাশাও আছে: উপদেষ্টা মাহফুজ Jul 08, 2025
img
২৬ ফুট অজগরের পেট থেকে উদ্ধার হলো কৃষক Jul 08, 2025
img
জবি শিবিরের নতুন নেতৃত্বে রিয়াজুল ও আরিফ Jul 08, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় ‘উৎসব’: সৌম্য জ্যোতির অভিনয়ে কেঁদে ফেললেন শাহনাজ খুশি Jul 08, 2025
img
ফিরে দেখা ৮ জুলাই: সমন্বয়ক কমিটি গঠন, সরকারকে আল্টিমেটাম Jul 08, 2025
img
সহজে চুরি হওয়া পাসওয়ার্ডের বিকল্প হতে পারে পাসকি Jul 08, 2025
img
মনে আছে আলিফ লায়লার জনপ্রিয় নাবিক সিন্দাবাদের কথা? Jul 08, 2025
img
রাউজানে বোরকা পড়ে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা Jul 08, 2025
img
২৬টি সাপের বিষকে হার মানাবে উটের চোখের জল Jul 08, 2025
img
সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তে স্বাধীন নন দেশের ৭৭ শতাংশ নারী Jul 08, 2025
img
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক পদে জাহাঙ্গীর কবির Jul 08, 2025
img
প্রথম পছন্দ ছিলেন নানি, শেষমেশ থাম্মুডু গেল নিথিনের হাতে Jul 08, 2025
img
পরিচালকের চেয়ার ছেড়ে অভিনয়ে অভিষান জীবিন্ত Jul 08, 2025
img
আনসার বাহিনীর দুই পরিচালক পদে রদবদল Jul 08, 2025
img
সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ব্যাংক হিসাব জব্দ Jul 08, 2025
img
নয় ঘণ্টা ঘুমিয়ে নয় লাখ টাকা জিতলেন তরুণী Jul 07, 2025
img
নীল ছবির জগৎ ছেড়ে ইসলাম ধর্মে জাপানের অভিনেত্রী Jul 07, 2025