এখন তো আওয়ামী দোসর নেই, ক্যাম্পাসে লাশ পড়বে কেন : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ৫ আগস্টের পর আমরা সবাই একটু স্বস্তিতে থাকতে চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষক-ছাত্ররা নির্বিঘ্নে ক্লাসে যাবে-বের হবে। কিন্তু এখনো কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতি? ক্যাম্পাসের মধ্যে তরুণ ছাত্রের লাশ, রক্ত ঝরছে। এখন তো আওয়ামী দোসররা নেই, তাহলে কেন লাশ পড়বে?

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের ছাত্রদলের প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনের আয়োজন করে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘গত পরশু রাত ১২টার সময় ছাত্রদল নেতা সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। কী অন্যায় করেছিল সাম্য? আমার তো মনে হয়, এখানে রাজনৈতিক কারণ আছে। তিনজন ভবঘুরে সাম্যকে কেন হত্যা করবে? কয়েকদিন আগে শাহবাগে জাতীয় সংগীত বন্ধের আন্দোলন চলছিল।তার বিরুদ্ধে সে ফেসবুকে এবং জাতীয় সংগীতের পক্ষে পোস্ট করেছে। এটাই কি সেই কারণ?’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ফ্যাসিবাদী আমলে পার্শ্ববর্তী দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলায় আবরারকে হত্যা করা হয়। আজকে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ৭১ এবং স্বাধীনতার পক্ষে কথা বললে তার জীবন চলে যায়! অর্থাৎ দেশের পক্ষে, যারা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, যারা জাতীয় সংগীতের পক্ষে, তাদের জীবন চলে যায়! এজন্যই বলেছি, নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজকে হাসিনা নেই, দোসররা নেই, তাহলে রক্তপাত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে তফাজ্জল নামে একজনকে হত্যা করা হয়েছে। ক্যাম্পাস হবে শান্তির, এখানে থাকবে শান্তির পতাকা। সেখানে কেন রক্তপাত হবে? এটা তো হওয়ার কথা নয়।’

ঢাবি ভিসিকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই মুখ্যপাত্র বলেন, ‘কালকে ছাত্রদলের নেতারা আপনার কাছে গিয়েছিল। আপনি বিরক্ত হয়েছেন, ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তুই-তোকারি করেছেন। আপনি শুনতে চান না, কারণ সাম্য ছাত্রদল করে। আপনার রাজনৈতিক চিন্তা দর্শন কী, সেটা আমরা ইতিমধ্যে জেনে ফেলেছি। যারা জাতীয়তাবাদের পক্ষে সেখানে রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে ছাত্র সংগঠন করে, সেটা আপনি পছন্দ করেন না। আপনার উচিত ছিল প্রথমে সাম্যকে দেখা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তা করেননি। ভাইস চ্যান্সেলররা যদি নিজ দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে নেমে যান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনোই শান্তি বয়ে আনবে না।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘আপনারা (সরকার) কাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন, সেটা জানি না। আপনাদেরকে আমরা সমর্থন করেছি, এখনো করে যাচ্ছি। কিন্তু এনসিপি যখন যমুনার দিকে যায়, তখন তাদেরকে সাদরে বরণ করেন। তিন-চারদিন আগে দেখলাম আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে তারা গেলেন, তাদেরকে সাদরে বরণ করলেন। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা তাদের আবাসনের জন্য গেল, তখন তাদেরকে উপহার দিলেন লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড। সরকারের দায়িত্বে আপনারা, সুশীল সমাজের লোক। কিন্তু আপনাদের আচরণের মধ্যে এই দ্বিচারিতা-বিভাজন কেনো?’

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন, সাবেক ছাত্রনেতা মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তবে কি বিচ্ছেদের গুঞ্জন মিথ্যা প্রমাণ করতেই সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে কানে ঐশ্বরিয়া? May 22, 2025
img
আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হারের লিটনের মন্তব্য May 22, 2025
img
আবারো আলোচনায় সুবাহ, জানালেন বিয়ে করতে চান তিনি! May 22, 2025
img
বিএনপির ১২ নেতার পদ ছয় মাসের জন্য স্থগিত May 22, 2025
img
বিএনপি যাতে নির্বাচনে আসতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র চলছে : ইশরাক হোসেন May 22, 2025
img
বার্সার কাছে সর্বোচ্চ বেতন চান ইয়ামাল May 22, 2025
img
মিরপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০০ একর জমি উদ্ধার May 22, 2025
img
ঢাকা বোট ক্লাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড May 22, 2025
img
মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা ঝুঁকিতে ফেলেছে অন্তর্বর্তী সরকার : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ May 22, 2025
img
জুলাই অভ্যুত্থান : অসমাপ্ত রাজনৈতিক বিপ্লব ও ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে আলোচনায় রক মনু May 22, 2025
img
ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সাম্য হত্যার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সাদা দলের বৈঠক May 22, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৯৩ May 22, 2025
img
ক্লাব বিশ্বকাপের আগে রিয়ালের ইনজুরি তালিকা আরেকটু লম্বা হলো May 22, 2025
img
আত্মসমর্পণ করে কারাগারে ২৭ আ.লীগ নেতাকর্মী May 22, 2025
img
সরকার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে ইসিকে চিঠি দেবে May 22, 2025
img
১৭ বছর পর ট্রফি জয়ে ম্যানইউকে হারাল টটেনহ্যাম May 22, 2025
img
বিএনপি নেতার মোবাইলে আ. লীগের সাবেক মেয়রের ‘কল’, সিলেটে উত্তেজনা May 22, 2025
img
প্রাথমিক শিক্ষায় মানোন্নয়নে সরকারের ‘বিশেষজ্ঞ পুল’ গঠন May 22, 2025
img
লালমনিরহাট সীমান্তে পুশ-ইন, আটক ১১ May 22, 2025
img
ঈদযাত্রা : আজ ১ জুনের টিকিট বিক্রি শুরু May 22, 2025