যেখানে বলিউডে প্রতিদিন চলে সোশ্যাল মিডিয়া হাইপ, চটকদার প্রচার আর ওভারহাইপড সিনেমার ঢল, সেখানে চুপিচুপি নিজের জায়গা থেকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিট মেশিন হয়ে উঠেছেন অজয় দেবগন। না কোনো ঝাঁজালো প্রচার, না অগাধ পিআর—শুধু গল্পনির্ভর ছবি আর আত্মবিশ্বাসী অভিনয়ের মাধ্যমে একের পর এক সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি। করোনার পরবর্তী সময়ে বলিউড যখন ধুঁকছিল, তখন ঠিক চারটি ছবি দিয়ে অজয় বুঝিয়ে দিয়েছেন—যে অভিনয় আর গল্প ভালো, সেটাই শেষ কথা।
‘দৃশ্যম ২’ ছিল টানটান থ্রিলার, যেটা আগের কিস্তির চেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছিল। ‘শয়তান’ ছিল মানসিক দোলাচলের হরর, যেটা ভয়ের পাশাপাশি দর্শকদের ভাবিয়েছেও। ‘Singham' এগেইন’ হয়তো আগের মতো ধামাকা আনতে পারেনি, কিন্তু কপ ইউনিভার্সকে এখনও টিকিয়ে রেখেছে। আর ‘রেইড ২’ একদম নীরবে বিশাল সাফল্য এনে দিয়েছে—চতুর স্ক্রিপ্ট আর বাস্তবধর্মী উপস্থাপন যে এখনও চলে, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে এই ছবি।
যখন অনেকে ট্রেন্ড বা ফ্র্যাঞ্চাইজির ভিড়ে নিজেদের হারিয়ে ফেলছেন, তখন অজয় দৃঢ় প্লট, নৈতিক দিক আর গল্পের ওপর জোর দিয়ে সাফল্যের পথ তৈরি করেছেন। তিনি ওটিটি-তে অতিরিক্ত দেখা না যাওয়ায়, এখন তাঁর বড়পর্দায় প্রত্যাবর্তন একটা আলাদা গুরুত্ব পায়। এক ইন্ডাস্ট্রির ভেতরের মানুষ বলেছিলেন, “অজয় হয়তো ট্রেন্ডিং তালিকায় থাকেন না, কিন্তু তাঁর ছবি থাকে ঠিক সেখানেই যেটা আসল—বক্স অফিসে।”
আর এখানেই শেষ নয়, সামনে আরও বেশ কিছু আকর্ষণীয় প্রজেক্ট নিয়ে আসছেন অজয় দেবগন। যেমন ‘সন অব সরদার ২’ দিয়ে ফিরতে চলেছে মাসি অ্যাকশন আর কমেডির যুগলবন্দি। ‘দে দে পেয়ার দে ২’ নিয়ে আসছে মাল্টিপ্লেক্স দর্শকদের জন্য এক মজার পারিবারিক প্রেমের গল্প। আর ‘টোটাল ধামাল’–এর সিকুয়েল হতে যাচ্ছে পারিবারিক বিনোদনের জন্য একপ্রকার সোনার খনি।
সব মিলিয়ে অজয় এখন সেই অভিনেতা যিনি দুই দিকেই—মাস আর মাল্টিপ্লেক্স—সমানভাবে বাজি ধরে এগোচ্ছেন। অন্যরা যেখানে হেডলাইন খোঁজেন, সেখানে অজয় খুঁজে পান সঠিক গল্প আর শক্তিশালী চরিত্র। এমন এক সময়ে, যখন বলিউডের সবচেয়ে দরকার ছিল নির্ভরযোগ্য তারকা—অজয় দেবগন যেন হয়ে উঠেছেন সেই নীরব ত্রাণকর্তা। তিনি হয়তো সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকেন না, কিন্তু আজকের বলিউডে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নাম তিনিই।
এফপি