বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণশক্তি হচ্ছে শিল্পখাত। এ খাতের উৎপাদনের গতি ঠিক রাখতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বুধবার (২৮ মে) থেকে এই খাতে বাড়তি দৈনিক ১৫ কোটি (১৫০ মিলিয়ন) ঘনফুট গ্যাস যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৬ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেট্রোবাংলার নজরে এসেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের প্রকৃত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি-এপ্রিল মেয়াদে শিল্পে গ্যাস সরবরাহের গড় পরিমাণ দৈনিক ৮২৩ মিলিয়ন ঘনফুট। সে তুলনায় চলতি বছর একই সময়ে (জানু-এপ্রিল, ২০২৫) শিল্পে ৯৯৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এ বছর ২১ শতাংশ গ্যাস বেশি সরবরাহ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর জন্য গত বছরের তুলনায় ৬টি অতিরিক্ত এলএনজি কার্গো আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার আমদানি মূল্য প্রতি ঘনমিটার প্রায় ৬৫ টাকা বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
একইসঙ্গে বলা হয়, সরকার শিল্পে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে তৎপর এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকার আশা করে যে, এ বিষয়ে সব বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে।
এর আগে, রোববার (২৫ মে) সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী নেতারা জানান, গ্যাস সরবরাহ পাওয়ার ক্ষেত্রে রপ্তানি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার প্রদান করা উচিত হলেও তা করা হচ্ছে না, বরং রপ্তানি আয়ের মূল উৎসের প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাসের অভাবে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। অধিকাংশ টেক্সটাইল মিল এবং পোশাক কারখানায় গ্যাসের শূন্য চাপের প্রমাণ রয়েছে।
গ্যাস সরবরাহের এই অবস্থা চলতে থাকলে বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিটিএলএমইএ এর অধীনের টেক্সটাইল এবং পোশাক খাতের প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। এই সংকট চলতে থাকলে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে রপ্তানি কমে যাবে। ফলে ফরেন রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সামষ্টিক অর্থনীতি মেরামতের সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে। নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। এতে আর্থিক সংকট ঘনীভূত হবে, ব্যাংক ঋণ এবং শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধে আশঙ্কা তৈরি হবে মর্মে উৎপাদক এবং রপ্তানিকারকরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
এসএম/এসএন