ঈদ আনন্দে যখন গোটা দেশ ডুবে, জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা তখন ঘাম ঝরাচ্ছেন মাঠে। ছুটি নেই, বিশ্রাম নেই- সামনে যে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের কঠিন লড়াই। ১০ জুন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শক্তিশালী সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হবে জামাল ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। আর এই ম্যাচের জয়কেই ঈদের শ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে দেখছেন প্রধান কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা।
ঈদের আগের দিন বিকেলে অনুশীলনের আগে জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ক্যাবরেরা বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা সিঙ্গাপুরকে হারিয়ে দেশবাসীকে ঈদের উপহার দিতে চাই।’ আত্মবিশ্বাসী হলেও তার কণ্ঠে ছিল বাস্তবতার ছোঁয়া।
ভুটানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে মাত্র ছয় মিনিটেই গোল এনে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। জামালের কর্নার থেকে হেডে বল জালে জড়ান তিনি। সেই গোল আর দলীয় পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট কোচ বললেন, ‘ভুটানের বিপক্ষে আমরা সেট পিস থেকে গোল করেছি, যা আগে তেমন হতো না। গত তিন ম্যাচে আমরা সেট পিস থেকে কোনো গোল খাইনি, এটি খুবই ইতিবাচক। ক্লিন শিট পেয়েছি, এটা আরও বড় প্রাপ্তি।’
তবে ফিনিশিং নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ রয়েছে ক্যাবরেরার। কারণ, ভুটান ম্যাচে অনেক সুযোগ তৈরি হলেও গোল এসেছে মাত্র দুটি। তবুও তিনি দুশ্চিন্তায় নন, ‘আমরা দুটি গোল করেছি, এতে আমি খুশি। ফিনিশিং উন্নত করতে হবে, তবে এটিই ফুটবল।’
জামাল ভূঁইয়ার আক্রমণভাগে সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসাও করেন তিনি। যদিও বাস্তবে অধিকাংশ ম্যাচেই জামালকে দেখা গেছে রক্ষণ সামলাতে। ‘জামালের এমন খেলা নতুন কিছু নয়,’ মন্তব্য করেন কাবরেরা, ‘সে গত তিন বছর ধরেই এই ভূমিকায় দারুণ খেলছে।’
তবে প্রতিপক্ষ এবার ভুটান নয়, সিঙ্গাপুর- যারা বৃহস্পতিবার মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে। সেই ম্যাচে ফেরেন ফরোয়ার্ড ইখসান ফান্দি, আর ফিরেই জোড়া গোল করে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের জন্য। বিষয়টি মাথায় রেখেই ক্যাবরেরা সাজাচ্ছেন নতুন পরিকল্পনা।
এদিকে ঈদের দিনেও থেমে নেই প্রস্তুতি। হামজা, ফাহামেদুল, জামাল, ঈসারা জাতীয় স্টেডিয়ামে করছেন নিবিড় অনুশীলন। ঈদের সালামি হিসেবে একটি জয়ই চাইছেন তারা- নিজেদের জন্য, কোচের জন্য এবং দেশের জন্য।
১০ জুনের ম্যাচটা তাই শুধু আরেকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ নয়, বরং এটি হতে যাচ্ছে আত্মপ্রত্যয়ের লড়াই, যেখানে একটি জয় হতে পারে গোটা জাতির ঈদের আনন্দকে পরিপূর্ণ করে তোলার উৎস।
এসএম/টিএ