নিতেশ তিওয়ারি পরিচালিত 'রামায়ণ' হতে চলেছে ভারতের অন্যতম বৃহৎ সিনেম্যাটিক প্রজেক্ট। যেখানে শুধুই বিশাল বাজেট নয়, রয়েছে চমকে দেওয়ার মতো কাস্টিং, কাহিনি আর প্রযুক্তিগত নির্মাণশৈলী। এই চলচ্চিত্র নিয়ে যত দিন যাচ্ছে, ততই সামনে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তেমনই এক চমক ছিল সুর্পণখা চরিত্র ঘিরে। হ্যাঁ, রাবণের বোন সুর্পণখা — যার অপমান থেকেই শুরু হয়েছিল সীতাহরণ আর শেষ পর্যন্ত পৌঁছেছিল লঙ্কার যুদ্ধ। সেই জটিল, রাগে-ঘৃণায়-আঘাতে গঠিত চরিত্রটির জন্য প্রথমে ভাবা হয়েছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে।
২০২২ সালের শেষ দিকে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে এই চরিত্র নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়। চরিত্রটির ভেতরে ছিল এক ধরনের ক্যারিশমা, সংবেদনশীলতা এবং প্রবল রাগ — যেটা নির্মাতারা মনে করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। তবে সে সময় প্রিয়াঙ্কা ব্যস্ত ছিলেন 'সিটাডেল' সিজন ২, 'হেডস অফ স্টেট', এবং নিজের প্রোডাকশন সংক্রান্ত কাজ নিয়ে। তাই সময় দিতে না পারায়, শেষমেশ এই প্রজেক্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি।
এরপরেই নির্মাতাদের নজর যায় রাকুল প্রীত সিংহের দিকে। এবং প্রায় নিশ্চিতভাবে এখন তিনিই হতে চলেছেন এই যুগান্তকারী চরিত্রের নতুন রূপ।
প্রোডাকশন সংক্রান্ত এক সূত্র বলেছে, “রাকুল চরিত্রটির জন্য একদম উপযুক্ত। এটা কোনো কার্টুনসুলভ সুর্পণখা নয়, বরং এক নিঃসঙ্গ, অপমানিত নারীর প্রতিশোধস্পৃহা আর আত্মমর্যাদার লড়াই।”
নিতেশ তিওয়ারির 'রামায়ণ' সিনেমার কাস্ট ইতিমধ্যেই বেশ জাঁকজমকপূর্ণ: রাম চরিত্রে রণবীর কাপুর, সীতায় সাই পল্লবী, রাবণ হিসেবে দেখা যাবে কেজিএফ খ্যাত যশকে। এছাড়াও, কাইকেয়ীর চরিত্রে লারা দত্ত, হনুমানের চরিত্রে সানি দেওল এবং মন্দোদরীর ভূমিকায় কাজল আগারওয়ালের নাম উঠে আসছে গুঞ্জনে।
এই চলচ্চিত্রটি দুই পর্বে মুক্তি পাবে — প্রথমটি ২০২৬ সালে এবং দ্বিতীয়টি ২০২৭ সালে। প্রতিটি অংশেই রয়েছে ৫০০ কোটির বেশি ভিএফএক্স বাজেট, যা ইঙ্গিত দেয় কতটা বিশাল পরিসরে কাজ হচ্ছে এই ছবির জন্য।
যদি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এই চরিত্রে থাকতেন, তাহলে আন্তর্জাতিক দুনিয়াতেও এই কাস্টিং হতো শিরোনাম। তবে রাকুল যদি নিজের অভিনয়ে সত্যিই প্রাণ ঢালেন, তাহলে এই ছবিটি হতে পারে তার কেরিয়ারের মোড় ঘোরানো কাজ।
আর প্রিয়াঙ্কার জন্য? সময় দিতে না পারলে বড় প্রজেক্টও হাতছাড়া হতে পারে — এটা তারই উদাহরণ।
সব মিলিয়ে, 'রামায়ণ' সিনেমার যেমন প্রতীক্ষা বাড়ছে, তেমনি জমে উঠছে এর কাস্টিংয়ের নেপথ্যের কাহিনি — যা হয়তো একসময় স্বয়ং মহাকাব্যকেও টেক্কা দিতে পারে।
আরএম/টিএ