তারকা হলেও রক্তমাংসের মানুষ। পর্দার আড়ালে কষ্ট, রোগ আর ট্রোলিংয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করেও হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন। কিন্তু সামান্থা রুথ প্রভু যেন সেই বিরল উদাহরণ, যিনি কেবল নিজের জন্য নয়, হাজার হাজার লুকিয়ে থাকা যোদ্ধাদের পক্ষেও উচ্চারণ করছেন প্রতিবাদের ভাষা।
মাইটোসিস নামের জটিল অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত সামান্থা। একসময় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন। ওষুধ, চিকিৎসা আর মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে ফিরেছেন নতুন জীবনে। কিন্তু ফিরেও পেয়েছেন ‘রোগা’, ‘অসুস্থ’ এমন ট্রোলিংয়ের ঝড়। বারবার তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে — এত পাতলা, এত দুর্বল কেন তিনি? এবার আর চুপ থাকলেন না ‘শক্তির প্রতীক’ এই অভিনেত্রী।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে নিজের এক কঠিন ফিটনেস ওয়ার্কআউট ভিডিও পোস্ট করে তিনি ট্রোলারদের সোজাসাপ্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। বলেন, তাঁর মতো একবার তিনটি লিফট করে দেখানোর সাহস আছে তো? আর যদি না থাকে, তাহলে মুখ বন্ধ রাখাই শ্রেয়। ক্যাপশনের একদম শেষ লাইনে লেখেন, ‘চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করো বা দূরে সরে যাও।’
এই এক লাইনেই যেন ভেঙে পড়ল সামাজিক স্টেরিওটাইপের দেয়াল। মুখে না বলেও বুঝিয়ে দিলেন — শরীরের আকৃতি নয়, মনের জোরই একজন মানুষকে সংজ্ঞায়িত করে।
সামান্থার এই বার্তা শুধুই ট্রোলারদের জবাব নয়। এটা এক মুক্তির ডাক — তাদের জন্য, যারা প্রতিনিয়ত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কাছে হেরে যাচ্ছেন। তিনি যেন বলতে চাইলেন, শরীরের গড়ন নয়, ভেতরের যুদ্ধটাই আসল জয়।
এদিকে ক্যারিয়ারের দিকেও সামান্থা থেমে নেই। তাঁর আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট ‘সিটাডেল: হানি বানি’ ইতিমধ্যেই প্রশংসা কুড়িয়েছে। পাশাপাশি নিজের প্রযোজনা সংস্থা থেকে ‘শুভম’ নামে একটি নতুন কমেডি-ড্রামা তৈরি করছেন। রোগ, ট্রোলিং, মিডিয়া — কিছুই তাঁকে আটকে রাখতে পারেনি। বরং তাঁর প্রত্যাবর্তন এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছে।
পর্দার গ্ল্যামার নয়, সত্যিকারের শক্তির প্রতিমূর্তি হয়ে উঠছেন সামান্থা। যখন গোটা দুনিয়া সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে বিচার করে, তখন তিনি যেন দাঁড়িয়ে বলেন — আত্মবিশ্বাসই আসল সৌন্দর্য।
এসএন