এ যেন সিনেমার নয়, বরং কনট্রাক্টের যুদ্ধ। রাজিনীকান্তের 'কুলি' আর 'জুরাসিক ওয়ার্ল্ড: রিবার্থ'—দুটি প্রমিজিং মেগা প্রজেক্ট, কিন্তু IMAX স্ক্রিনে তাদের ঠাঁই হলো না। কারণ? দরজার পেছনে একচেটিয়া চুক্তি আর কর্পোরেট রাজনীতি।
চার জুলাই মুক্তি পাওয়ার কথা 'জুরাসিক ওয়ার্ল্ড: রিবার্থ'-এর। বিশাল ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরি এই ছবিটিকে মনে করা হচ্ছিল বছরের অন্যতম ভিজ্যুয়াল ব্লকবাস্টার। অথচ এই অভিজ্ঞতার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার—IMAX স্ক্রিন—সে অধিকার পেল না। কারণ, তখন চলবে 'এফওয়ান: দ্য মুভি'-র দু’সপ্তাহের একচেটিয়া রান। এরপর ১১ জুলাই থেকে ‘সুপারম্যান’ IMAX-এর দখলে।
অন্যদিকে, তামিল সুপারস্টার রাজিনীকান্তের বহু প্রতীক্ষিত ছবি 'কুলি'। লোকেশ কানাগারাজের পরিচালনায় এই ছবিটি তৈরি হয়েছে পুরোপুরি IMAX দর্শনের লক্ষ্যেই। কিন্তু ভারতে একটিও IMAX স্ক্রিনে মুক্তি পাবে না ‘কুলি’। কারণ, ১৫ আগস্ট মুক্তি পাচ্ছে Yash Raj Films-এর ‘ওয়ার ২’, আর সেই ছবির জন্য IMAX ইন্ডিয়া-র সঙ্গে চুক্তি করে IMAX স্ক্রিনগুলো আগেভাগেই বুক করে নিয়েছে ওয়াইআরএফ।
ফলে 'কুলি' ভারতে কোনও IMAX স্ক্রিন পাচ্ছে না — মুক্তির প্রথম দুই সপ্তাহ পুরোপুরি দখলে রেখেছে 'ওয়ার ২'। এর ফলে শুধু প্রিমিয়াম দর্শন নয়, বক্স অফিসেও বড় ধাক্কা খেতে পারে রাজিনীকান্তের এই সিনেমা। তেলুগু রাইটস ₹৫০ কোটিতে এবং ওভারসিজ রাইটস ₹৮৫ কোটিতে বিক্রি হওয়া এই ছবিটি এখন প্রচারের ক্ষেত্রে বড় ফাঁদে পড়েছে।
এই প্রবণতা নতুন নয়। এর আগেও দেখা গেছে একাধিক বড় ছবি IMAX মনোপলির শিকার হয়েছে। 'আদিপুরুষ', '৮৩' থেকে শুরু করে 'ইন্টারস্টেলার' রি-রিলিজ—সবাই কোনো না কোনোভাবে স্ক্রিনের রাজনীতির শিকার হয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে—স্ক্রিপ্ট না চুক্তিই কি সিনেমার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করছে? একসময় যেখানে পরিচালক, অভিনেতা আর কাহিনী ছিল মূল চালিকাশক্তি, এখন সেখানে এগিয়ে রয়েছে স্টুডিওর ব্যবসায়িক ক্ষমতা। দর্শক, যারা প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে টিকিট কাটেন, তাদেরও যেন এ যুদ্ধে মত প্রকাশের অধিকার নেই।
IMAX যদি সত্যিই সিনেমা অভিজ্ঞতার মানদণ্ড হতে চায়, তাহলে একচেটিয়া বাণিজ্যের আগে দর্শকের চাহিদা আর সৃজনশীলতাকেও মূল্য দেওয়া জরুরি। কারণ, সিনেমা শুধুই ব্যবসা নয়—এটা এক অভিজ্ঞতা, যা ভাগ করে নেওয়া যায়, কিনে নেওয়া যায় না।
এসএন