২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে যখন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো একের পর এক সফল প্রজেক্টে দর্শকদের মন জয় করে নিচ্ছে, তখন নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া যেন ছুটছে অন্য পথে। যেটি হওয়া উচিত ছিল এক সাহসী গল্প বয়ানের সময়, সেটিই এখন পরিণত হয়েছে প্রতিশ্রুতি না রাখতে পারার দৃষ্টান্তে।
এই বছরের শুরুতেই প্ল্যাটফর্মটি যে কয়েকটি অরিজিনাল সিরিজ নিয়ে এসেছে, তার মধ্যে একমাত্র 'ব্ল্যাক ওয়ারেন্ট'-ই কিছুটা আলোর রেখা দেখাতে পেরেছে। রুদ্ধশ্বাস নির্মাণ ও নিঃশব্দ উত্তেজনার গল্পে সিরিজটি দর্শকের স্বীকৃতি পেলেও, বাকিগুলো যেন ছিল ভুল ঠিকানার গল্প। 'দ্য রোশানস', 'ডাব্বা কার্টেল', 'খাকী: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার' কিংবা 'সিআইডি ২'-এর মতো সিরিজগুলোর মধ্যে ছিল না কাঙ্ক্ষিত গুণগত মান বা নতুনত্বের ছোঁয়া। এমনকি কিছু সিরিজ এতটাই সাদামাটা ও লক্ষ্যহীন ছিল যে, দর্শক তা নিয়ে আলোচনা করতেই অনিচ্ছুক।
সিনেমার দিকেও অবস্থা করুণ। 'নাদানিয়ান', 'জুয়েল থিফ', 'টেস্ট' - প্রত্যেকটি সিনেমাই দর্শক ও সমালোচকের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছে। চলচ্চিত্র নির্মাণে নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া যে একপ্রকার পথ হারিয়ে ফেলেছে, তা এখন স্পষ্ট। সামান্য প্রশ্রয় পেয়েছে 'ধুম ধাম'-এর মতো মাঝারি মানের ছবি, কিন্তু তাতে প্ল্যাটফর্মের সম্মান বাঁচে না।
এছাড়া যেটুকু সম্মান নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া ধরে রাখতে পেরেছে, তা এসেছে লাইসেন্সড ছবির মাধ্যমে। 'পুষ্পা ২: দ্য রিলোডেড' কিংবা 'জাট', 'হিট: দ্য থার্ড কেস', 'পেরুসু'-র মতো ছবিগুলো দর্শক টানতে পারলেও সেগুলো আসলে প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব নির্মাণ নয়।
ডকুমেন্টারি ও নন-ফিকশন ঘরানায় তো প্রায় শুন্য অবদান। একসময় এই ক্ষেত্রেই নেটফ্লিক্স বিশ্বজুড়ে পৃষ্ঠপোষকতা করত সত্যের সাহসী গল্পগুলির - এখন সেখানে মৌনতা।
সব মিলিয়ে নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া-এর ২০২৫ সালের প্রথমার্ধ যেন এক সতর্কবার্তা। সৃজনশীল দুর্বলতা, বৈচিত্র্যহীন গল্প ও সাধারণ মানের প্রডাকশনে প্ল্যাটফর্মটি তার নিজস্ব পরিচয় হারাচ্ছে।
সব আশা এখন ‘আপ জ্যায়সা কোই’ নামের একটি রোম্যান্টিক প্রজেক্টের দিকে, যা কিনা দর্শকদের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে। না হলে বছরের দ্বিতীয়ার্ধও হয়ে উঠতে পারে শুধুই আরও একটি অনুতাপের অধ্যায়।
টিকে/